শিক্ষায় সুখবরের বছর - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষায় সুখবরের বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দেখতে দেখতে চলে গেলো আর একটি বছর। গতানুগতিক মুখস্তবিদ্যার শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে জাতিতে বের করে আনতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের কর্মযজ্ঞ চলেছে এ বছর। শিক্ষায় যা যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। নতুন বছর থেকে এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে তাই নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জল্পনা কল্পনা কম ছিলো না। এ বছন সর্বোচ্চ সংখ্যাক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে। এ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বেড়ে হয়েছে দুই দিন। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় রেকর্ড জিপিএ-৫ পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ বছর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সবচেয়ে বড় শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। স্কুল-কলেজের সবচেয়ে সব শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। শিক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তনের খবরের পাশাপাশি এ বছর প্রশ্নফাঁস ও প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িকতার মত ন্যাক্কারজনক ঘটনাও ঘটেছে। শিক্ষা প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের পরও একটি কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকরাই এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করেছেন। বিশ্বাস হারিয়েছেন কর্তাদের। এসব ঘটনাই ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা প্রশাসনে আলোচনার তুঙ্গে ছিলো।

শিক্ষায় বড় পরিবর্তনে নতুন শিক্ষাক্রম : 

শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ব্যবস্থায় বড় রকমের পরিবর্তন এনে প্রণয়ন করা প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে এ বছরের ৩০ মে। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ শিক্ষাক্রমের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছিলেন। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। তাই চলতি বছর এ শিক্ষাক্রম নিয়ে শিক্ষা প্রশাসনের সর্বত্র আলোচনা ছিলো তুঙ্গে। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ কারিকুলাম বাস্তবায়ন হলে ‘মধ্যযুগীয়’ শিক্ষাব্যবস্থার অবসান হবে এবং বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থার মহাসড়কে নতুন প্রজন্ম প্রবেশ করবে। কারিকুলামে মুখস্ত জ্ঞাননির্ভর শিক্ষা থেকে সরে এসে অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষায় প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিক শিখন নিশ্চিত করা হচ্ছে। পরীক্ষার বিষয় ও পাঠ্যপুস্তকের চাপ কমানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কারিকুলাম অনুসারে প্রাথমিকে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়েই ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে। কোন পরীক্ষা থাকবে না। আর চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে গিয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ। আর ৪০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে ক্লাস শেষে পরীক্ষার মাধ্যমে যেটি সামষ্টিক মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণিতে বিদ্যালয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ এবং ৪০ শতাংশ হবে সামষ্টিক মূল্যায়ন। নবম ও দশম শ্রেণিতে কয়েকটি বিষয়ে শিখনকালে অর্ধেক মূল্যায়ন হবে এবং বাকি অর্ধেক সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩০ ভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং ৭০ ভাগ সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষাক্রমে উঠে যাচ্ছে প্রাথমিক সমাপনী এবং জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাও। শুধু দশম শ্রেণি শেষে একটি পাবলিক পরীক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি শেষে প্রচলিত এইচএসসি পরীক্ষার বদলে শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণি শেষে একটি ও দ্বাদশ শ্রেণি শেষে একটি, মোট দুই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। 

শিক্ষকের হাতেই প্রশ্নফাঁস :

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। গত সেপ্টেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থগিত করা হয় চারটি পরীক্ষা। এ নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষার আগের রাতেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশ্ন ছড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর পাওয়া যায় পরীক্ষার আগেই। প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়ার পর দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চারটি পরীক্ষা স্থগিত করে। এগুলো হচ্ছে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান ও রসায়ন। প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় পুরো শিক্ষা প্রশাসনে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় জড়িত এমপিওভুক্ত নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষক-কর্মচারী গ্রেফতার হয়েছেন। এক সভায় শিক্ষা সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক আক্ষেপ করে বলেছেন, কাকে বিশ্বাস করবো। এর কিছুদিন পরই বেসরকারি শিক্ষকদের পাবলিক পরীক্ষার কাজ থেকে বাদ দেয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে শিক্ষা প্রশাসন। 

প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উপাদান :

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে বাংলা প্রথম পত্রের সৃজনশীল অংশের একটি প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির অভিযোগ ওঠে। প্রশ্নপত্রের ১১ নম্বর প্রশ্নের উদ্দীপকে দেখানো হয়, ‘নেপাল ও গোপাল নামে সনাতন ধর্মের দুই ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের জেরে এক ভাই তার সম্পত্তি এক মুসলিমের কাছে বিক্রি করেন। শেষ পর্যন্ত ওই পরিবারকে ভারতে চলে যেতে হয়।’ গল্পে প্রচ্ছন্নভাবে বোঝানো হয় যে ওই পরিবার ভারতে চলে যাওয়ার পেছনে কাজ করেছে ধর্মীয় সহিংসতা। প্রশ্নপত্রে এমন উসকানিকে সাম্প্রদায়িকতা বলছেন বিশ্লেষকরা।

ওই ঘটনায় বিব্রত খোদ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিও। প্রশ্নপত্র নিয়ে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর ধারাবাহিক সাফল্য থাকলেও এবারের প্রশ্ন ফাঁস এবং প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িকতার উসকানি দেয়া ঘটনা সবকিছু ম্লান করে দিয়েছে। এ ঘটনায় দুইজন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাসহ মোট পাঁচজন শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। 

সর্বোচ্চ এমপিওভুক্তি :

দেশের বেসরকারি স্কুল, কলেজ, কারিগরি ও মাদরাসা পর্যায়ের ২ হাজার ৭১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে গত জুলাইয়ে এমপিওভুক্ত করেছে সরকার। এগুলোর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ও ডিগ্রি কলেজ ছিল ২ হাজার ৫১টি। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল ৬৬৫টি। যা নন-এমপিও শিক্ষকদের মনে স্বস্তি এনেছে। নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া ৬৬৬টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১ হাজার ১২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৩৬টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০৯টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, ১৮টি ডিগ্রি কলেজ এমপিও কোড পেয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওর আবেদনের প্রক্রিয়া চলছে। আর ৯৭টি এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান, ২০০টি এইচএসসি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি প্রতিষ্ঠান, ২টি ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার প্রতিষ্ঠান, ২৬৪টি দাখিল মাদরাসা, ৮৫টি আলিম মাদরাসা, ৬টি ফাজিল মাদরাসা, ১১টি কামিল মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভু্ক্ত হয়েছেন ইতোমধ্যে।  

সর্বোচ্চ শিক্ষক নিয়োগ :

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে চলতি বছর রেকর্ডের সৃষ্টি হয়েছে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে গত ১৮ ডিসেম্বর মোট ৩৭ হাজার ৫৭৪ জন প্রার্থীকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই ডোপ টেস্টের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। আগামী ২২ জানুয়ারি  সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে প্রার্থীদের যোগদান করতে বলা হয়েছে। এর পরদিন ২৩ জানুয়ারি নতুন শিক্ষকদের পদায়নের আদেশ জারি করা হবে। আর নতুন শিক্ষকদের দুই দিনের ওরিয়েন্টেশন হবে ২৩ থেকে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে। 

বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াও এ বছর শুরু হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে এ নিয়োগের আবেদন গ্রহণ শুরু হবে।  বিভিন্ন এমপিওভুক্ত স্কুল কলেজের ৩১ হাজার ৫০৮টি পদ এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৬ হাজার ৮৮২টি পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি দুই দিন :

এর আগে শুধু শুক্রবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য এই ছুটি বাড়িয়ে দুই দিন করা হয়েছে। শুক্রবারের পাশাপাশি এখন শনিবারও বন্ধ ঘোষণা হয়েছে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা-বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষকরা দীর্ঘদিন দুই দিন সপ্তাহিক ছুটির দাবি জানাচ্ছিলেন। দুই দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণায় শিক্ষক শিক্ষার্থীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। 

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে রেকর্ড জিপিএ-৫ :

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেছেন। ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। গত বছর এসএসসি ও সমমানে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩০৪। গত বছরের তুলনায় এ বছর জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছেন ৮৬ হাজার ২৬২ জন। 

এবার এসএসসিতে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব বিষয়ে পরীক্ষাও হয়নি। এসএসসিতে যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে সেগুলো হলো, বাংলা, ইংরেজি, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উচ্চতর গণিত, জীববিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় উদ্যোগ, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা, ভূগোল ও পরিবেশ, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, অর্থনীতি, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান এবং কৃষি শিক্ষা। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগভেদে এসব বিষয় বিভাজন হয়। এসএসসি পরীক্ষার হয় দুই ঘণ্টায়। 

দ্বিতীয়বারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি :

চলতি ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে দেশের ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি প্রদানকারী দেশের আটটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। তবে এসবের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই এখনো ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। 

ফের প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা চালু :

দীর্ঘ এক যুগ পর প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা চালু করেছে সরকার। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরু হওয়া ওই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে বৃত্তি দেয়া হতো। প্রাথমিক সমাপনী এ বছর পরীক্ষা হয়নি। তাই বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত  বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান এ চার বিষয়ে দুই ঘণ্টা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বিষয়ে ২৫ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বরে হবে এ পরীক্ষা। পঞ্চম শ্রেণির ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন। প্রশ্নপত্র সম্বলিত বুকলেটে এ পরীক্ষা নেয়া হবে। বুকলেটের নির্ধারিত জায়গায় টিক চিহ্ন এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে লিখে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এ পরীক্ষার জন্য পৃথকভাবে উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে না। 

পাঠ্যবই নিয়ে অনিশ্চয়তা :

বৈশ্বিক সংকট ও ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কাগজ সংকটে চলতি বছর বিনামূল্যের বই বিতরণ নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছিলো। সংকট মোকাবিলায় প্রকাশকরা অন্য কোনো বই না ছাপানোর অঙ্গীকার করলেও পরে ছেপেছেন বৃত্তি পরীক্ষার নোট-গাইড বই। এ পরিস্থিতিতে ৮০ শতাংশ বই দিয়ে আগামী ১ জানুয়ারি বই উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। তবে, মধ্য জানুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষার্থী বিনামূল্যের পাঠ্যবই হাতে পেয়ে যাবেন বলে এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।  

শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্টে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া শুরু :

অবসরপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলের জন্য বেসরকারি স্কুলে ভর্তির সময় প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় এ বছর শুরু হয়েছে। বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির সময় প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে এ খাতে। কলেজে ভর্তির সময়ও এ টাকা আদায় করা হবে। যথাক্রমে ২০০৪ ও ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি বাবদ শিক্ষকদের অবসর ও কল্যাণ ভাতার টাকা আদায়ের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা দিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া শুরু হলো। 

ভর্তিতে শিক্ষার দপ্তর-সংস্থার কর্মীদের সন্তান কোটা :

একাদশ শ্রেণিতে ও সরকারি স্কুলের ভর্তিতে শিক্ষার দপ্তর-সংস্থার কর্মীদের সন্তানদের জন্য ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ শুরু হয়েছে।  শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তর ও সংস্থায় কর্মরত-কর্মচারীদের সন্তানদের মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের সরকারি স্কুলে  ভর্তির জন্য নূন্যতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। আগে  এ সুবিধা শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের দেয়া হলেও এবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, এনটিআরসিএ, শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মচারীদের সন্তানরা এ সুবিধা পেয়েছেন। অপরদিকে কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার দপ্তর ও সংস্থার কর্মীদের জন্য ২ শতাংশ কোটা রাখা ফের শুরু হয়েছে এ বছর।  

প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা বন্ধ :

নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা আসলেও ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ থেকেই এ পরীক্ষা নেয়া বন্ধ করেছে সরকার। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর এ পরীক্ষা হয়নি। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বাস্তবায়ন শুরু হতে যাওয়া নতুন কারিকুলামেও এর ঘোষণা নেই। তাই ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এ দুই পরীক্ষা বাদ দেয়া হলো। এ পরীক্ষা দুটি শিশুদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছিলো বলে অভিযোগ তুলেছিলেন শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরা। 

শিক্ষার্থীর আত্মহত্যায় কাঠগড়ায় অভিভাবক-শিক্ষকরা :

হলিক্রম স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারপিতা ফাইহার আত্মহত্যার ঘটনা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাঠগড়ায় দাঁড় করায়। কেউ কেউ অভিযোগ তোলেন শিক্ষক তাকে ফেল করানোয় সে আত্মহত্যা করেছে। অপরদিকে অভিযোগ ওঠে, পরিবারের চাপে আত্মহননের মত রাস্তা বেছে নিয়েছে সে। এদিনে বুয়েট ছাত্র ফারদিন নুরের মৃত্যুও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038871765136719