শিক্ষা ঋণের ফাঁদে ধুঁকছে হাজারো মার্কিন নাগরিক - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা ঋণের ফাঁদে ধুঁকছে হাজারো মার্কিন নাগরিক

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

১৯৭৭ সালে মার্কিন শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রথমবারের মতো শিক্ষা ঋণ নিয়েছিলেন সি ডব্লিউ হ্যামিলটন। অ্যারিজোনার কোচিশ কলেজ থেকে একটি সহায়ক ডিগ্রি লাভের জন্য ৫ হাজার ২৫০ ডলার ঋণ করেন তিনি। সেই সময় এ হ্যামিলটন ভেবেছিলেন, ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ হিসেবে কাজ করবে এ শিক্ষা ঋণ। কিন্তু আদতে সেই ঋণ তার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৪০ বছর পর এসেও তিনি সেই ঋণের বোঝা টেনে চলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে পরিশোধ করার পরও এখনো যে পরিমাণ ঋণ তার মাথায় রয়েছে তা প্রায় মূল ঋণের সমপরিমাণ। 

ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এমন বেশকিছু ঘটনার কথা উঠে এসেছে। কেবল হ্যামিলটন নন, তার মতো এমন প্রায় ৪৭ হাজার মানুষ আছেন যারা অন্তত ৪০ বছর ধরে তাদের নেয়া ফেডারেল স্টুডেন্ট লোনের অর্থ পরিশোধ করে চলেছেন। কিন্তু ঋণ শেষ হচ্ছে না। শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এসব ঋণগ্রহীতার মধ্যে ৮২ শতাংশ ঋণখেলাপি। অর্থাৎ নির্ধারিত ২৭০ দিনের মধ্যে তারা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি।

এদেরই একজন ৭২ বছর বয়সী হ্যামিলটন। তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘‌এটি অনেকটা ফাঁসের মতো আমার গলার চারপাশে ঘিরে রেখেছে। আমি খুবই সামান্য উপার্জন করি। এখন মনে হয়, জীবনে এ ঋণের বোঝা থেকে আর মুক্ত হতে পারব না।’

জাতীয় ভোক্তা আইন কেন্দ্রের শিক্ষার্থী ঋণগ্রহীতা সহায়তা প্রকল্পের পরিচালক অ্যাবি স্যাফ্রথ বলেন, ‘‌এটি একটি বিস্ময়কর ব্যর্থতা। আর্থিক অবস্থাভেদে ঋণ নেয়া শিক্ষার্থীদের ঋণ ব্যবস্থাপনার জন্য বেশকিছু সহায়তা কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু সব মিলিয়ে জোড়াতালি লেগে পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে যে শিক্ষা বিভাগ ও ঋণগ্রহীতারা এটি সমাধান করতে পারছে না।’

যে ৪ কোটি ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী এ ফেডারেল শিক্ষা ঋণ নিয়েছেন, উল্লেখিত শিক্ষার্থীরা এর বড় অংশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের অভিযোগ থেকে এটা প্রমাণ হয় যে সাধারণ মানুষকে সহায়তার জন্য নেয়া এ উদ্যোগ সবার ক্ষেত্রে একইভাবে কাজ করছে না। দীর্ঘ সময়ের প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং প্রকল্প পরিকল্পনায় দুর্বলতার কারণে অনেক ঋণগ্রহীতাকেই ঋণের দুষ্টচক্রে ফেলে দিয়েছে। এমনকি বাইডেন প্রশাসনও এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছিল। যার মধ্যে ছিল আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাও। এমনকি ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত ঋণ মওকুফের পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। কিন্তু এসব সংশোধনের পরও হ্যামিলটনের মতো ঋণগ্রহীতারা আদৌ কতটুকু উপকৃত হবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

হাজারো মানুষ কীভাবে দশকের পর দশক ধরে ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছেন তা বুঝতে হলে ফেডারেল স্টুডেন্ট লোন পরিশোধের উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। যখন ঋণগ্রহীতা শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ত্যাগ করবে, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের একটি ১০ বছর মেয়াদি ঋণ পরিশোধের স্কিমে যুক্ত করা হয়। অন্যরা স্নাতক শ্রেণীর অন্য কোনো কোর্সে ভর্তি হয়ে সময়কাল বাড়িয়ে নেয়। কেউ কেউ শিক্ষাজীবন পরবর্তী মাসিক আয়ের সঙ্গে ঋণ পরিশোধ পরিকল্পনা যুক্ত করে নেয়। 

কেউ চাইলে কিছুদিনের জন্য ঋণ পরিশোধ বন্ধ রাখতে পারে, এতে তার পরিশোধের সময়সীমাও বেড়ে যায়। শিক্ষা বিভাগের তথ্য বলছে, একজন শিক্ষার্থী শিক্ষা ঋণ নেয়া শুরুর পর থেকে পরিশোধ করতে সাড়ে ১৫ বছরের মতো সময় লেগে যায়। অবশ্য এ সময় নির্ভর করে ঋণের পরিমাণ, শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার সময় ও কী পরিমাণে অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে তার ওপর।  

হ্যামিলটনের ক্ষেত্রে যেটি হয়েছে, তিনি কোশিন কলেজ থেকে এভিয়েশন-সংক্রান্ত লেখাপড়া শেষ না করেই বের হয়ে গিয়েছিলেন। এর পর থেকে তিনি স্বল্প মজুরির বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে পাঁচ সন্তানের জনক হ্যামিলটনের জন্য শিক্ষাজীবনে নেয়া ঋণ পরিশোধ করা কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে পরিণত হয়েছে। আবার শিক্ষাজীবন শেষ করার পর ঋণ পরিশোধের তাগাদা দিয়ে কোনো চিঠিও তিনি পাননি। কিন্তু সরকারের দেয়া শারীরিকভাবে সামর্থ্যহীন মানুষদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রণোদনা পাওয়ার পর থেকেই ঋণ পরিশোধের বিষয়টি সামনে আসে। 

এইচএসসি পরীক্ষা ১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত - dainik shiksha এইচএসসি পরীক্ষা ১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত দাবি পূরণ হয়েছে, এখনও কীসের আন্দোলন: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha দাবি পূরণ হয়েছে, এখনও কীসের আন্দোলন: প্রধানমন্ত্রী আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিলেন শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিলেন শিক্ষামন্ত্রী ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি ও ফেসবুক নিয়ে বিটিআরসির নির্দেশনা - dainik shiksha ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি ও ফেসবুক নিয়ে বিটিআরসির নির্দেশনা কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট - dainik shiksha কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৭ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৭ জন চিহ্নিত স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর - dainik shiksha স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর মেট্রোস্টেশনে সম্ভাব্য ক্ষতি ৫০০ কোটি টাকা - dainik shiksha মেট্রোস্টেশনে সম্ভাব্য ক্ষতি ৫০০ কোটি টাকা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0068390369415283