শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের যোগসাজশে গোপালগঞ্জের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না, শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসছে না। অনেকে আবার অগ্রীম হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে স্কুল ফাঁকি দিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকছেন। এতে করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীরা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রমজান ও ঈদের ছুটির আগে শেষ কার্যদিবসে সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের চরবড়ফা গ্রামের ২০১নং পারচাপালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শেরীনা চৌধুরী (কবিতা) স্কুলে উপস্থিত না থেকে অগ্রীম হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে নিজের উপস্থিতি দেখিয়েছে। পরে গোপালগঞ্জে কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদকর্মী সরজমিন গিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, অন্যান্য সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। এ ঘটনায় অভিভাবক ও এলাকাবাসী শিক্ষা কর্মকর্তাদের স্কুল তদারকির দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা মুক্তা খানম ও ফারজানা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, শেরীনা ম্যাডাম সেদিন স্কুলে আসেননি, কখন কীভাবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর হয়েছে সেটি আমরা জানি না। জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মারুফ রেজা বলেন, ওই স্কুলের শিক্ষকদের অনিয়মের কথা আগেও শুনেছি, আগামী মাসিক মিটিংয়ে উপজেলায় উত্থাপন করে শিক্ষা কর্মকর্তাদের নজরে আনা হবে।
এ বিষয়ে চন্দ্র দীঘলিয়া ক্লাষ্টারের এটিও বাসুদেব বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, রমজান মাসে এ রকম একটু হয়ে থাকে, বিষয়টি দেখছি বলে গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের এক সহকারী জানান, এটিও বাসুদেব বিশ্বাসের যোগসাজশে ওই ক্লাষ্টারের অনেক শিক্ষকই স্কুল ফাঁকি দেয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করছে। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল হামিদ বলেন, স্কুলে না এসে অগ্রীম হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা চাকরি বিধির পরিপন্থি। আজ থেকে স্কুল বন্ধ হচ্ছে, স্কুল খোলার পর তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেল আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।