শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটি’ গঠন করতে পারবে সরকার - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটি’ গঠন করতে পারবে সরকার

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ কমিটি গঠনের বিধান করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও সুনাম রক্ষায় গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি বা অ্যাডহক কমিটির বিকল্প হিসেবে  ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটি’ নামে এ কমিটি গঠিত হবে। গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে সরকারের অনুমোদন নিয়ে এক কমিটি গঠন করবে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এ কমিটি গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির মতো সব ক্ষমতা ভোগ করবে এবং মেয়াদ হবে দুই বছর।

এসব বিধান যুক্ত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০২৩-এর খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। সরকারের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে শিক্ষা বোর্ডগুলোও উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটি গঠন করতে পারবে।

বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া মেয়াদের মধ্যে নতুন কমিটি গঠনে ব্যর্থ হলে বা কমিটি ভেঙে দেয়া হলে অ্যাডহক কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে। অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ ছয় মাস।

সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ প্রবিধানটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রবিধানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক, একই ব্যক্তি পরপর দুই মেয়াদের বেশি সভাপতি পদে না থাকাসহ বেশ কিছু নতুন বিধান যুক্ত হয়েছে।

জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি সাগুফতা ইয়াসমিন বলেন, কমিটির বৈঠকে আমরা প্রবিধান নিয়ে আলোচনা করেছি। বিষয়গুলো আগেও কমিটিতে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ প্রায় সব বিষয়ে আমাদের সম্মতি রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন হয় কিংবা শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়, এমন প্রেক্ষাপটে বিশেষ কমিটি গঠনের বিধান যুক্ত হয়েছে। আমরা এটাকে স্বাগত জানিয়েছি।

সাগুফতা ইয়াসমিন

সর্বশেষ ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি সংক্রান্ত প্রবিধান জারি হয়। পরে উচ্চ আদালতে এক নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে পদাধিকার বলে সংসদ সদস্যদের এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠানের কমিটির সভাপতি থাকার বিধানসহ কিছু ধারা বাতিল করা হয়।

প্রস্তাবিত প্রবিধানমালায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও সুনাম রক্ষার স্বার্থে চারটি কারণে ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটি’ গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেগুলো হলো, গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে কিংবা প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ, সভাপতির বিরুদ্ধে কোনো আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে, প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ ও বিশৃঙ্খলা বিরাজমান থাকলে, ভর্তি বা অতিরিক্ত ভর্তি ফরম পূরণ এবং নিয়োগ ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম প্রমাণিত হলে এবং প্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীল পরিবেশ ও মানসম্মত তথা গুণগত শিক্ষাদানে অন্তরায় সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রতীয়মান হলে।

কোন প্রক্রিয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটি গঠন হবে প্রস্তাবিত প্রবিধানে তা উল্লেখ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধিক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বা তার মনোনীত প্রতিনিধি উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটির সভাপতি হবেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা তার প্রতিনিধি, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বা তার প্রতিনিধি, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মনোনীত একজন অভিভাবক প্রতিনিধি এ কমিটির সদস্য হবেন।

ঢাকা ছাড়াও বিভাগীয় শহরে উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটির সভাপতি হবেন বিভাগীয় কমিশনার বা তার প্রতিনিধি। এই কমিটির সদস্য হবেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বা তার প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক বা তার প্রতিনিধি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক বা উপপরিচালকের প্রতিনিধি, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি এবং বিভাগীয় কমিশনার মনোনীত একজন অভিভাবক প্রতিনিধি। অন্যান্য অধিক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক বা তার মনোনীত প্রতিনিধি হবেন উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটির সভাপতি। এছাড়া সদস্য হবেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বা তার প্রতিনিধি, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসক মনোনীত একজন অভিভাবক প্রতিনিধি। গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির মতো সব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান হবেন কমিটির সদস্য সচিব। উদ্ভূত পরিস্থিতি কমিটি ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সব ক্ষমতা প্রয়োগ এবং দায়িত্ব পালন করতে পারবে। এর মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ দুই বছর। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সরকার পুনরায় কমিটি গঠন করতে পারবে।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029199123382568