পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি স্কুলগুলোর অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ- যেমন খুশি অর্থে শিক্ষা বিক্রি করা যায় না। গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু অতিরিক্ত স্কুল ফি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিচারপতি বলেন, বেসরকারি স্কুলগুলো নিজেদের ইচ্ছামত যেমন খুশি ফি নির্ধারণ করতে পারে না। এ ব্যাপারে বিচারপতি বসু বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধির উপর রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন। এর আগের দিনের শুনানিতেও বিচারক রীতিমত ভৎর্সনা করে বলেছিলেন, শিক্ষা কোনো মিষ্টির দোকান নয়। বেসরকারি বলেই যা খুশি ফি নির্ধারণ করা যায় না।
২০১২ খ্রিষ্টাব্দের আইনে বলা রয়েছে, ফি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের অনুমোদন থাকতে হবে। সেই অনুমোদন কি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে নেয়া হয়? তাই এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের অভিমত জানতে চেয়েছেন বিচারক।
কলকাতার দুটি বেসরকারি স্কুলের মাত্রাতিরিক্ত ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিলো। কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুল ও বিড়লা ভারতীর অভিভাবকদের একাংশ এই মামলা করেন।
কলকাতার বেসরকারি স্কুলগুলো নিজেদের খুশিমত ফি বাড়িয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একাদশে ভর্তির জন্য স্কুলগুলো ফি ধার্য্য করেছে ৪৫ হাজার থেকে ৯৫ হাজার রুপি পর্যন্ত। পড়ুয়া ও অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা না করেই এই বিপুল অঙ্কের ফি আদায় করা হয়। দিল্লি পাবলিক স্কুল ভর্তির জন্য নিচ্ছে ৯৫ হাজার রুপি। বিড়লা ভারতীয় নিচ্ছে ৮৬ হাজার রুপি। আর সাউথপয়েন্ট নিচ্ছে ৫৫ হাজার। অন্যান্য ক্লাসেও ফি বাড়ানো হয়েছে লাগামছাড়া। রীতিমত এক স্কুলের সঙ্গে অন্য স্কুলের প্রতিযোগিতা চলছে।
অভিভাবকদের ফোরাম জানিয়েছে, বিড়লা ভারতীর মতো স্কুলে বিভিন্ন ক্লাসে ২২ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। সাউথ পয়েন্ট স্কুলে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তবে স্কুলগুলোর দাবি, বেসরকারি স্কুল ট্রাস্ট বা সোসাইটি দ্বারা পরিচালিত হয়। সেখানে অভিভাবকরা জেনেশুনেই তাদের সন্তানদের ভর্তি করেন। আর ফি বৃদ্ধির ব্যাপারে অনুমোদনকারী বোর্ড বা রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না।