শিখন ঘাটতি পূরণে এইচএসসির সিলেবাসে কাটছাঁট - দৈনিকশিক্ষা

শিখন ঘাটতি পূরণে এইচএসসির সিলেবাসে কাটছাঁট

রুম্মান তূর্য, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

রুম্মান তূর্য, দৈনিক শিক্ষাডটকম: করোনা মহামারির কারণে চার বছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার পর আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে স্বাভাবিক সিলেবাসে উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষা আয়োজনের পরিকল্পনা ছিলো শিক্ষা প্রশাসনের। তবে, মহামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে শিখন ঘাটতি নিয়ে মাধ্যমিকের (এসএসসি ও সমমান) গণ্ডি পার হয়ে আসা ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার্থীদের আরো একবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। গত বছর বা চলতি বছরের মতো একই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে আগামী বছরের এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে সব বিষয়ে, পূর্ণ সময়ে ও পূর্ণ নম্বরের পরীক্ষায় বসতে হবে শিক্ষার্থীদের। করোনা মহামারির থাবায় এ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অষ্টম শ্রেণি থেকে শিখন ঘাটতিতে রয়েছেন বলে মনে করে শিক্ষা প্রশাসন। 

সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সভাপতিত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় ২০২৩ ও ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের মতো একই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্তে আসে শিক্ষা প্রশাসন। একাধিক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

প্রসঙ্গত, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমানে পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজন করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর মোর্চা আন্তশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আগামী বছর বা ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকেই স্বাভাবিক বা পূর্ণ সিলেবাসে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজনের পরিকল্পনা ছিলো। তবে, বলা হচ্ছে, এ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ঠিকঠাক ক্লাস করতে পারেননি। তাই ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে যে পরীক্ষা হয়েছে এবং ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে যে পরীক্ষা হবে-সেই একই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে সব বিষয়ে, পূর্ণ সময়ে ও পূর্ণ নম্বরের পরীক্ষা হবে।

অর্থাৎ গত বছরের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী আয়োজন করা হলেও ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমানের প্রতি পত্রের পরীক্ষা ব্যবহারিকসহ ১০০ নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে বহুনির্বাচনিসহ লিখিত পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা পুরো তিন ঘণ্টা সময় পাবেন।

জানা গেছে, করোনা মহামারিতে শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে গত তিন বছর ধরে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষাহচ্ছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। চলতি বছর জুনের শেষ দিকে (ঈদুল আজহার পর) অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষাও হবে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। যদিও গত ১৮ ডিসেম্বর আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সব বিষয়ে, পূর্ণ সময়ে ও পূর্ণ নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।

তবে গত ২৮ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় শিক্ষা প্রশাসন সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বলে দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছে সূত্র। সে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার জন্য প্রণীত সংক্ষিপ্ত বা পূনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা নেয়া হবে। 

আগামী বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে অষ্টম শ্রেণিতে থাকার সময় থেকেই শিখন ঘাটতিতে ছিলেন। করোনা মহামারির কারণে ওই বছর মার্চের শুরুতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যায়। মহামারিতে আহত শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত এ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা দিয়েছিলেন। 

সূত্র জানায়, ওইদিনে সভায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে পূর্ণাঙ্গ ক্লাস না পাওয়া ও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি দেয়া এ শিক্ষার্থীদের এইচএসসি পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে নেয়া হলে তা বাড়তি চাপ হয়ে যেতে পারে। আবার শিক্ষাপঞ্জি অনুসারে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই থেকে এ শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও তা শুরু হয়েছে ওই বছরের অক্টোবর থেকে। তাই তাদের ক্লাসের ঘাটতি রয়েছে তিন মাস। সভায় এ ব্যাচটিকে ‘কোভিডের কারণে একাডেমিকভাবে বঞ্চিত একটি ব্যাচ’ বলেও আখ্যায়িত করেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম। 

এনসিটিবি আরো বলে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা প্রায় সব বিষয়ে শিখন ঘাটতি নিয়ে এসএসসি উত্তীর্ণ হয়েছে এবং উচ্চমাধ্যমিকেও তাদের পূর্ণ সেশনে পর্যাপ্ত ক্লাসের সুযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। পরে সভায় আলোচনা করে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। 

 

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত - dainik shiksha প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি - dainik shiksha আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির - dainik shiksha আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি - dainik shiksha পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান - dainik shiksha ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033929347991943