বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আল মায়দা আক্তার রজনী (৮) নামের এক শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় তিন স্কুলছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। ধর্ষণের পর ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে ওই শিশুকে হত্যা করে জঙ্গলে ফেলে রাখা হয়। আটকদের স্বীকারোক্তি ও লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে এসব তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (০৬ মে) সকালের দিকে ধুনট থানা থেকে শিশুটির মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে শুক্রবার রাতে উপজেলার এলাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর সংলগ্ন পরিত্যক্ত জঙ্গল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত আল মায়েদা আক্তার রজনী এলাঙ্গী পশ্চিমপাড়া গ্রামের গাজীউর রহমান তালুকদারের মেয়ে। সে এলাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
আটককৃত তিনজনই কিশোর এবং সহপাঠী। তারা স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের আটক করে পুলিশ।
এদের মধ্যে এক কিশোর পুলিশের কাছে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করেছে। শনিবার দুপুর ২টার দিকে ধুনট থানা থেকে তাদের বগুড়া আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আটককৃত কিশোররা মাদকাসক্ত। তারা স্কুলের পাশের একটি জঙ্গলে বসে মাদক সেবন ও পর্ন ছবি দেখত। ওই জঙ্গলে শিশুটি আম কুড়াতে আসত প্রতিদিন। ঘটনার ১০ দিন আগে থেকেই শিশুটিকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে তারা।
বৃহস্পতিবার (০৪ মে) বিকেলে শিশুটি আম কুড়াতে জঙ্গলের ভেতর গেলে তাকে কৌশলে জঙ্গলের ভেতর নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা। এতে রক্তক্ষরণে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়ে। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার ভয়ে আটক তিনজনের মধ্যে এক কিশোর শিশুটির মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করে।
পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির করে না পেয়ে শুক্রবার দুপুরে শিশুটির বাবা ধুনট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সন্ধ্যার দিকে স্থানীয়রা জঙ্গলে তার লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্ত ও আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। আটককৃতদের একজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আটক অন্য দুজনও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে সে নিশ্চিত করেছে। এ ঘটনার জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আটক তিন সহপাঠীকে বগুড়া আদালতে পাঠানো হয়েছে।