পুরুষের জন্য জন্মনিরোধক পিল বা বড়ি তৈরির সম্ভাবনাকে এখন বাস্তব বলে বর্ণনা করছেন বিজ্ঞানীরা। তারা এমন একটি উদ্ভাবনের খুব কাছাকাছি রয়েছেন, যা শুক্রাণুর সাঁতার আটকে দিতে সক্ষম হবে।
ইঁদুরের ওপর চালানো পরীক্ষায় দেখা গেছে, শুক্রাণুকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্তব্ধ করে রাখতে পারে এই পিল, এবং ডিম্বাশয়ের কাছে পৌঁছানোর আগে শুক্রাণুর কার্যকারিতা ঠেকাতে ওই সময়টুকু যথেষ্ট। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তবে মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানোর আগে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ইঁদুরের পর খরগোশের ওপর এর পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।
এই উদ্ভাবনের মূল ধারণাটি হচ্ছে, যৌনমিলনের এক ঘণ্টা আগে ব্যবহারকারী পিলটি গ্রহণ করবেন এবং ঠিক এক ঘণ্টা পরই সঙ্গীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটানো শুরু হবে।
যেভাবে এই পিল শুক্রাণুর সাঁতার থামাবেনারীদের জন্মনিরোধক পিল যেমন হরমোনের সঙ্গে সম্পর্কিত, এটি তেমন নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পুরুষদের জন্য আবিষ্কার করা এই পিলের সঙ্গে হরমোনের কোনো সম্পৃক্ততা থাকবে না। বিজ্ঞানীরা এই পিলের ক্ষেত্রে একে একটা বড় ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছেন।
এটি টেস্টোস্টেরনে কোনো প্রভাব ফেলবে না এবং এর ব্যবহারে পুরুষের হরমোন ঘাটতিজনিত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না।
বিজ্ঞানীরা আরও দেখেছেন, ‘শুক্রাণু-সাঁতার’ কাটার প্রক্রিয়া পরিচালিত হয় যে নির্দিষ্ট কোষের মাধ্যমে, সেটি একটি সেলুলার সিগন্যালিং প্রোটিন। আর পরীক্ষা চালানো এই পিলের কাজ হবে সেই প্রোটিনকে বাধা দেওয়া।
ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের অর্থায়নে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানোর প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল এবং পরবর্তী সময়ে সেটি নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে ছাপা হয়।
দেখা গেছে, এই ওষুধের এক ডোজ ব্যবহারের ফলে ইঁদুরের যৌনকর্ম চলাকালীন এবং তার আগে ও পরে শুক্রাণুর নড়াচড়া থেমে যায়। তিন ঘণ্টা পর্যন্ত এর প্রভাব থাকে শরীরে। পরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন শুক্রাণু প্রবাহে শরীরে পিলের কার্যকারিতা আর থাকে না।
গবেষক দলের সদস্য নিউইয়র্কের উইল কর্নেল মেডিসিনের একজন বিজ্ঞানী ড. মেলানি বলবাখ বলেছেন, পিলটি কার্যকর পিল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।