নিজের নাম ছাড়া কিছুই লিখতে পারেন না। এসএসসি বানানও জানেন না তিনি। তবুও এবার এসএসসি পাস করেছেন জয়তন বেগম। এনিয়ে আলোড়ন চলছে নাটোরের সিংড়া উপজেলায়। আলোচিত ওই নারী সিংড়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। জয়তন এ বছর সিংড়া পৌরসভা ভবন সংলগ্ন কারিগরি মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৪ দশমিক ৬১ পেয়েছেন।
তিনি ভোকেশনাল শাখার সিভিল কন্সট্রাকশন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা বিষয়গুলোর নাম বলতে না পারলেও তার ফলে বাংলা, গণিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, পদার্থ, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িং, শারীরিক শিক্ষা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এট্যাচমেন্ট ট্রেনিং, সিভিল কনস্ট্রাকশন পাঠ-১ ও পাঠ-২ বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছেন। এছাড়া ইংরেজি ও রসায়নে এ আত্ম কর্মসংস্থান ও ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয়ে এ মাইনাস এবং ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায় বি পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সিংড়া পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দাবি, এটা তো জলন্ত সত্য কথা যে ওই কাউন্সিলর লিখতে পারেন না। পৌরসভার একাধিক কাউন্সিলর বলেন, সে নির্বাচিত হওয়ার পর কোন রকম তার নাম স্বাক্ষর করা শিখেছেন। তবে কিভাবে তিনি পরীক্ষায় পাস করলেন তাদের জানা নেই।
জানতে চাইলে কাউন্সিলর জয়তন বেগম বলেন, সব পরীক্ষায় তিনি অংশ নিয়েছেন। লিখতে পারেন কিনা বা কয়টি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলা, গণিত, অংক ও ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন। আর অন্য বিষয়গুলো না দেখে বলতে পারবেন না জানিয়ে ফোন কেটে দেন।
পরে ফের যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ১৪টি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছি।
সিংড়া কারিগরি মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অফিস সহকারী শরিফুল ইসলাম জানান, জয়তন বেগম ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি হন। পরবর্তীতে করোনার কারণে অটোপাস করেন। আর এবারের এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় জিপিএ-৪ দশমিক ৬১ পেয়ে পাস করেছেন। তার জন্ম তারিখ ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ অক্টোবর, এসএসসির রোল নম্বর ১৮৮৫২৬। তবে করোনার কারণে প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়নি এবং তার লেখা কোন খাতা প্রতিষ্ঠানে নেই।
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আব্দুস সবুর বলেন, ওই নারী কাউন্সিলর লিখতে পারেন। তিনি সব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং পরীক্ষায় কোন অসৎ পন্থা অবলম্বন করেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুর রহমান বলেন, তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি জানা নেই।