শেখ মুজিবের ছবিতে মন্তব্য করায় ৪ মাসের জেল, শিক্ষা জীবন শেষ - দৈনিকশিক্ষা

শেখ মুজিবের ছবিতে মন্তব্য করায় ৪ মাসের জেল, শিক্ষা জীবন শেষ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এডিট করা একটি ছবিতে কমেন্ট করায় জেল ও পড়ালেখা বন্ধের সম্মুখীন হয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদ।

গতকাল রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।

ফয়েজ বলেন, ‘আমি কোনো ফেক আইডি থেকে পোস্ট করিনি। কেবল একটা মন্তব্য করেছি। কিন্তু আমাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে চার মাস জেলে বন্দি করে রাখা হয়। আমাকে থানায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। কেউ সাহায্য করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে আমার বাবা, তাকে অপমান করা হয়েছে। আমার চার বছর পড়াশোনা বন্ধ ছিল। আমি অসংখ্যবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার নাছের, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন ও আমার বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে পড়াশোনা করতে দেননি। বাদশা স্যার আমাকে বলেছেন, তোমাকে ধর্ষণ মামলায় সহায়তা প্রদান করলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে কোনো মামলায় আপস করব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার জীবনটা শেষ করার পেছনে দায়ী ফ্যাসিবাদের দোসর বাদশা মিয়া। আমি সেই মামলায় খালাস পেয়েছি। তিনি আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আমাকে পড়তে দেওয়া হবে না। আমার বিরুদ্ধে ভুয়া তদন্ত কমিটির মাধ্যমে দোষীসাব্যস্ত করে বহিষ্কারাদেশ বহাল রেখেছেন। অথচ আমি কতবার তার হাত-পা ধরেছি; বলেছি, আমাকে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি আমাকে সেই সুযোগ দেননি।’

নোবিপ্রবির ওই শিক্ষার্থী বলেন, কোনো প্রকার মামলা ছাড়াই আমাকে গ্রেফতার করা হয়। নোবিপ্রবি ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা প্রিতম আহমেদ বাদী হয়ে আমার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। যেখানে স্বাক্ষী হিসেবে ছিলেন তৎকালীন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার নাসের, শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সজিব এবং বিএমএস বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগনেতা সাব্বির। দীর্ঘ চার মাস আমি কারাগারে থাকি। পরবর্তীতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে জামিন পেয়ে বের হয়ে আসি।’

ন্যায়বিচার প্রার্থনায় আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘আমি প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অভিযোগ দেব। আমি দেখব, বিশ্ববিদ্যালয় কী ব্যবস্থা নেয়? যদি তারা আমাকে ন্যায়বিচার দিতে না পারে আমি আদালতে মামলা করব। আমি শেষ দেখতে চাই। আমার মতো কারও সাথে এমন ঘটনা ঘটুক, আমি তা চাই না।’

অভিযোগের বিষয়ে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। প্রথমত, বহিষ্কার করা এবং ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড ও একাডেমিক কাউন্সিলের হাতে। সেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ওর ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছি।’

জানা গেছে, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ অক্টোবর মুহম্মদ মুমিন আদ দ্বীন নামক একটি আইডি থেকে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামক একটি গ্রুপে নোবিপ্রবির বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সঙ্গে ভিপি নুরের এডিট করা ছবি পোস্ট করা হয়। সেই পোস্টের সমালোচনা করে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি শাহরিয়ার নাসের পোস্ট করেন। সেখানে ফয়েজ আহমেদ কমেন্ট করেন, ‘এখানে দুঃসাহসের কিছু তো দেখছি না’। এই একটি কমেন্টের কারণে ফয়েজ আহমেদকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তাকে পাঁচদিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে দীর্ঘ চার বছর ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান বিপ্লব মল্লিককে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে সদস্য হিসেবে ছিলেন তৎকালীন প্রক্টর নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহমেদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক আফসানা মৌসুমী, ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট আনিসুজ্জামান রিমন ও সদস্য সচিব হিসেবে ছিলেন নোবিপ্রবি বিএনসিসির পিইউও একিউএম সালাউদ্দিন পাঠান।

শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046310424804688