ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে সবুজ ভবিষ্যৎ নিশ্চিততে কাজ করে যেতে হবে। সেই সঙ্গে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে বিকল্প পণ্য সহজলভ্য করার আহ্বান প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে ও নিয়ন্ত্রণে আনতে বিকল্প পণ্য তৈরির জন্য ভাবতে হবে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিস ইন বাংলাদেশের (এডাব) উদ্যোগে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এ আহ্বান জানান তারা।
বৈঠকে বক্তব্য রাখেন এডাবের চেয়ারপারসন আব্দুল মতিন, কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, লেখক ও সাংবাদিক শামীমা চৌধুরী, এ কে এম জসীম উদ্দিন, তপন কুমার বিশ্বাস, হাসান হাফিজসহ অনেকে।
গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রতি মিনিটে ১ মিলিয়ন প্লাস্টিকের বোতল ক্রয়-বিক্রয় হয়। আর প্রতি বছর ৫ ট্রিলিয়ন প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অর্ধেক প্লাস্টিকই একবার ব্যবহারযোগ্য, যার ৮৫ শতাংশই অপচনশীল বর্জ্য হিসেবে ছড়িয়ে পড়ছে। সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত ৭ বিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্যের ১০ শতাংশেরও কম পুনরায় ব্যবহৃত হয়। প্লাস্টিকের মাইক্রো অংশ মানুষের শরীরে প্রবেশ করে নানা ক্ষতিক্ষর প্রভাব ফেলছে। তাই প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে এবং পরিবেশসম্মত বিকল্প পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
পরিবেশ দূষণ রোধে গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা কয়েকদফা সুপারিশ করেন। এগুলো মধ্যে আছে, স্থানীয়, প্রাতিষ্ঠানিক ও জাতীয় পর্যায়ে কিছু কৌশল ও নীতিমালা গ্রহণ করা, সরকারি নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক পণ্য বর্জন করা, প্লাস্টিক বর্জ্য পণ্য পুনরায় ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ও কম্পোস্ট তৈরি, সৌর ও বায়ু শক্তিতে বিনিয়োগ করে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানো, দূষণ রোধে নীতিমালা প্রণয়ন ও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন।
তাদের সুপারিশে আরো আছে, ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় পরিমাণে বৃক্ষরোপন, জলাধার সংরক্ষণ ও উদ্ধার, রোধে নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, জলাধার থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও জলাধার পুনরুদ্ধারে কঠোর হওয়া, অতিরিক্ত এসি, ফ্রিজ, গাড়ি ব্যবহার কমিয়ে আনতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা, বাড়ি নির্মাণে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে জনগণকে বাধ্য করা। এছাড়া জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় বাস্তুতন্ত্র ঠিক রাখতে অকারণে গাছ কাটা বন্ধ করা, ছাদ বাগানের জন্য ট্যাক্স কমানোর ঘোষণা কাঠামোগত ও সুনিয়ন্ত্রিতভাবে বাস্তবায়ন, প্রত্যেক পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক পরিবেশ বিষয়ক কমিটি তৈরি, কমিটি লিফলেট, কর্মশালা, সেমিনার, পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি ইত্যাদির মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের সাথে সরাসরি পরিবেশগত তথ্য আদান-প্রদান ও প্রচারনামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারে, গণমাধ্যমকে সম্পৃক্ত করে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব ও অন্যান্য পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকারণ প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ করা যেতে পারে।