নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ, মুঠোফোন, ব্যাগসহ মালামাল কেড়ে নেয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ছিনতাই হওয়া ১টিসহ মোট ১৪৮টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গত সোমবার ভোর থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে এই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারী প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা না আসায় ফোনটি বুঝিয়ে দেওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কেউ মামলা করেননি। পরে ছিনতাইয়ের অভিযোগে আজ বুধবার পুলিশের বাদী হয়ে করা একটি মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর আদর্শ গ্রামের মোবারক হোসেন, বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের দামোদরদী গ্রামের মো. বিল্লাল হোসেন, কাঁচপুর এলাকার মুঠোফোন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন, রাকিম মিয়া ও মিন্টু মিয়া।
ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার ভোর থেকেই জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও ঘটনার তদন্তে কাজ শুরু করে পুলিশ। সে অনুযায়ী সোমবার ভোরে ঘটনাস্থলের কিছু দূর থেকে মোবারক হোসেন নামের এক চিহ্নিত ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত আটটি ডাকাতি ও ছিনতাই মামলা আছে। থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোবারক জানান, মূলত প্রবাসফেরত গাড়ি মনে করে তাঁরা সেদিন সমন্বয়কদের গাড়িতে আক্রমণ করেন। তখন তাঁরা গাড়ি চালকের পকেটে থাকা আড়াই হাজার টাকা ও একটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যান।
ওসি বলেন, মোবারকদের ছিনতাই করা ফোন বিল্লাল হোসেন কাঁচপুরে একটি চোরাই মুঠোফোন বিক্রয়কারী দোকানে বিক্রি করেন। বিল্লালকে গ্রেফতারের পর তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী চোরাই মুঠোফোন বিক্রয়কারী আনোয়ার হোসেন, রাকিম মিয়া ও মিন্টু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১৪৮টি চোরাই ফোন জব্দ করা হয়।
এদিকে গ্রেফতার মোবারক হোসেন নারায়ণগঞ্জ আদালত চত্বরে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দাবি করেন, ছিনতাই ও ডাকাতির সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা থাকলেও বৈষম্যেবিরোধী ছাত্রনেতাদের গাড়িতে হামলার ঘটনায় তিনি জড়িত নন।
রোববার দিবাগত রাতে সাংগঠনিক কাজে বান্দরবানের লামায় যাওয়ার পথে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বহন করা গাড়িটি হামলার মুখে পড়ে। ওই গাড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, মাহমুদা সুলতানা, রাকিব মোহাম্মদ, মুঈনুল ইসলাম, ইব্রারিম নীরব; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন মিতু ও ছাত্রনেতা মিশু আলী ছিলেন।