বয়স ষাট বছর পূর্ণ হলে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের প্রধানদের দায়িত্ব ছাড়তেই হবে। নতুন এমপিও নীতিমালা অনুসারে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে তাদের সহকারী প্রধান বা জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের কাছে অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক পদের ভার ছাড়তে হবে। পরে নিয়োগের বিষয়টি সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে বয়স ষাট পূর্ণ হওয়া প্রধানরা ফের দায়িত্বভার গ্রহণ করতে পারবেন। তবে, অনুমোদন পাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। দায়িত্ব না ছাড়লে ওইসব ষাটোর্ধ্ব প্রধানের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা বাবদ প্রাপ্য টাকা বাতিল করা হবে। আর তাদের দায়িত্ব থেকে না সরালে পদ হারাতে পারেন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
গত বছর দেয়া একই ধরনের আদেশ কার্যকরে ব্যর্থ অধিদপ্তর গতকাল সোমবার ষাটোর্ধ্ব স্কুল-কলেজের প্রধানদের দায়িত্ব ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে ফের আদেশ জারি করেছে। ওই আদেশে দায়িত্ব না ছাড়লে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অবসর ও কল্যাণ সুবিধা বাতিল ও সভাপতি পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে অধিদপ্তর। গত অক্টোবরে প্রথম দফায় ষাটোর্ধ্ব অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে আদেশ জারির পর ফের একই নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করা হলো। এদিন সন্ধ্যায় দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
জানা গেছে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে জারি হওয়া এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে ষাটোর্ধ্ব অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। নীতিমালা অনুসারে, সরকারের কোনো আর্থিক সুবিধা বা এমপিও না নেয়ার শর্তে সরকারের অনুমোদনক্রমে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চে ওই নীতিমালা জারির পর অনেক অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের বয়স ষাট বছর পার হলেও তারা দায়িত্ব ছাড়ছেন না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার আবেদন করে তারা দায়িত্বে আছেন। দায়িত্বে থাকতে তাদের কেউ কেউ রিট মামলা করেছেন বলেও জানা গেছে।
মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সরকারের অনুমোদন ছাড়া বয়স ষাট বছরের বেশি হওয়ার পর প্রতিষ্ঠান প্রধানরা দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। তাদের দায়িত্ব ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে। তবে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অনুমোদন দিলে তারা ফের দায়িত্বে বসতে পারবেন। যতোদিন তা অনুমোদন হচ্ছে না ততোদিনের জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষক বা জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের কাছে দায়িত্ব ছাড়তে হবে।
ডিজি আরো বলেন, কেউ কেউ মামলা করছেন বলে জেনেছি। কিন্তু ওইসব মামলা ধোপে টিকবে না, তাই লাভ নেই। বিধি মোতাবেক দায়িত্ব না ছাড়লে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কল্যাণ ও অবসর সুবিধা বাতিল ও এমপিও নীতিমালার ১৮.১ (খ) ধারা অনুসারে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে।
গতকাল অধিদপ্তরের জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, সরকারে পূর্বানুমোদন ছাড়া কোনোক্রমেই প্রতিষ্ঠান প্রধান পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া যাবে না। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধানের বয়স ষাট পূর্ণ হওয়ার পরও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের কাছে দায়িত্ব না ছেড়ে এমপিও নীতিমালার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে স্বপদে থেকেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অনুমোদনের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটিও এ কাজে সম্পৃক্ত, যা এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ষাট বছর পুর্তিতে অবসরে গেলে সহকারী প্রধান শিক্ষককে অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। সহকারী প্রধান না থাকলে জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিতে হবে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়া সরকারি আদেশের পরিপন্থি। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন আসলে সেই তারিখ থেকে তিনি দায়িত্ব পুনরায় গ্রহণ করতে পারবেন।
আদেশে আরো বলা হয়, ষাট বছর পূর্তিতে বিধি অনুযায়ী দায়িত্ব হস্তান্তর না করলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কল্যাণ ও অবসর সুবিধা বাতিল ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণা করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।