কুড়িগ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা বিভাগের তদারকির অভাবে নামমাত্র কাজ দেখিয়ে ওসব অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক দীর্ঘদিন ধরে তালাবদ্ধ, বেচিং নষ্ট, বিদ্যালয়ের ছাদ পলেস্তারা ওঠাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ওই বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত, স্লিপ, ওয়াশ ব্লক সংস্কার বাবদ বরাদ্দ দেয়া প্রায় তিন লাখ টাকা। ওই টাকা দিয়ে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষা উপকরণ ক্রয়, ওয়াশ ব্লক এবং বিদ্যালয় সংস্কার কাজে ব্যয় করার কথা। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে অবসরে যাওয়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আকবর নামমাত্র কাজ দেখিয়ে ওসব অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়ে চলতি বছরের জুলাই মাসে মা সমাবেশ দেখিয়ে খাবারের পাঁচ হাজার টাকার একটি ভাউচারে বিল উত্তোলন করার ঘটনায়। তিনি গত ৫ মে অবসরে যাবার আগেই এপ্রিল মাসে বিদ্যালয় বন্ধ থাকাকালীন এসব কাজ করে বিল তুলেছেন।
একই উপজেলার চর ধাউরার কুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্রও প্রায় একই। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে উন্নয়নের জন্য প্রতিবছর যে বরাদ্দ আসে তা সম্পর্কে জানা নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের। ফলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি এবং কর্মকর্তারা অনায়াসে আত্মসাৎ করেন ওসব টাকা।
ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের নয়ারচর কোল পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৩ শতক জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৮ শতক জমিতে বিদ্যালয়ের একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ওই বিদ্যালয় ভবনের চারপাশে সীমানা প্রাচীর থাকলেও সেটির কাজ শেষ হয়নি। অথচ অসমাপ্ত সীমানা প্রাচীরের কাজ না করেই বিদ্যালয়ের বাকি ২৫ শতক জমিতে আংশিকভাবে দেয়া হয়েছে সীমানা প্রাচীর। কর্তৃপক্ষের এমন কাজ দেখে স্থানীয়দের অভিযোগ সরকারি টাকা অপচয় করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রাজিবপুর উপজেলা প্রকৌশলী সৌরভ কুমার সাহা স্কুলের ভবন থেকে অন্য স্থানে দেয়াল নির্মাণ করে সরকারি অর্থ অপচয়ের ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে এই প্রসঙ্গে জানাতে পারবো।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, সরকারি টাকা আত্মসাৎ কিংবা অপচয় করার বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।