খুলনা জেলার ৩৮নং তেরখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এহতেশামুল হককে মারপিট করেছেন ওই স্কুলেরই সহকারী শিক্ষক সরদার নবীর হোসেন। বুধবার স্কুল চলাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে মারপিটের এক পর্যায়ে অন্যরা তাকে বাঁচাতে স্কুলের বাথরুমে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা আটকে রাখেন। বাথরুমে বসেই তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোনে ঘটনা জানিয়ে তাকে উদ্ধারের আহ্বান জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে।
৩৮ নং তেরখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিগত ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে খুলনা জেলার শ্রেষ্ঠ স্কুল হিসেবে পুরস্কৃত হয়। শিক্ষক এহতেশামুল হক ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে খুলনা জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। আহত এহতেশামুল হক বলেন, স্কুলের মোট শিক্ষক ১০ জন। সহকারী শিক্ষক নবীর হোসেন স্কুলে নিয়মিত উপস্থিত না হওয়ায় সমপ্রতি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলায় তাকে লঘু সাজা দেয়া হয়েছে।
কিন্তু মামলার ঘটনায় তিনি আমাকে দায়ী করে নানা সময় দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। বুধবার শিক্ষকদের কাছে স্কুলের যাবতীয় ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করা হয়। এ সময় নবীর হোসেন আমাকে বলেন- আপনি স্কুলের টাকা মেরে খান। এক পর্যায়ে সে ফোন দিয়ে লোকজন ডেকে আনে ও আমার ওপর চড়াও হয়। আমাকে লাথি, ধাক্কা ও মারপিট শুরু করে। স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা আমাকে বাথরুমে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে সিকল আটকে রাখেন।
তিনি বলেন, আমি তখন বাথরুমে বসেই উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও ওসিকে পুরো ঘটনা জানাই। তারা থানা থেকে পুলিশ ফোর্স এসে আমাকে উদ্ধার করে। এদিকে ঘটনার পর খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে নবীর হোসেন পালিয়ে যায়। আমার কানে, মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর এ বিষয়ে লিখিত দেয়া হয়েছে। এদিকে খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম স্কুলে হাজির হলেও শিক্ষক সরদার নবীর হোসেনকে পাননি। ঘটনার পর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
তেরখাদা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষককে পিটিয়েছেন বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তেরখাদা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. শারাফাত হোসেন মুক্তি ঘটনার বিষয়ে বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে ক্লাস টাইমে এই ধরনের ঘটনা খুবই ন্যক্কারজনক। এ ব্যাপারে তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি, কালকে (বৃহস্পতিবার) বিষয়টি নিয়ে বসবো।