জামালপুরে সাংবাদিক হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। গতকাল এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, পেশাগত দায়িত্ব পালনের স্বার্থে সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। ১৪ জুন বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিম বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন। সংবাদ প্রকাশের জেরে বকশীগঞ্জ উপজেলার এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির লোকজন তার ওপর এ হামলা চালিয়েছে। অতীতেও অনেক সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনার বিচার এখনো হয়নি।
সম্পাদক পরিষদ মনে করে, সত্যের পক্ষে লিখতে গিয়ে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের হত্যাকাণ্ড সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতার দৃষ্টান্ত। সম্পাদক পরিষদ নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছে। একই সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকার পরিপন্থী বিধায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যায় জড়িত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে সম্পাদক পরিষদ।
পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে রাতে বাড়ি ফেরার সময় গত বুধবার রাত ১০টার দিকে পাটহাটি এলাকায় পৌঁছলে ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত গোলাম রব্বানীর ওপর হামলা করে। পরে স্থানীয় সাংবাদিক ও পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখান থেকে রাতেই তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিনই মারা যান নাদিম।
এ ঘটনায় শনিবার নিহত সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে বকশীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২২ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি করা হয়। এরই মধ্যে এ মামলার প্রধান আসামি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ ১১ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র্যাব।
র্যাব জানিয়েছে, সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী চেয়ারম্যান বাবু ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা থেকে নাদিমকে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হত্যা করেন। গ্রেফতার রেজাউল, মনির ও জাকির মূলত বাবুর সন্ত্রাসী গ্রুপের অন্যতম সহযোগী।