জয়পুরহাটের সদর উপজেলার শেখপাড়া সাচ্চাপীর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদরাসার সাবেক সুপারের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি ভঙ্গ, নিয়োগ বাণিজ্য ও দায়িত্ব হস্তান্তর না করার অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও শিক্ষকরা। এ ব্যাপারে গত বুধবার দুপুর ২টায় জেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ওই মাদরাসার সহ-সুপার রুহুল আমিন অভিযোগ দেন। ওই আবেদনের প্রতিষ্ঠানের ১৩ জন শিক্ষক ও কর্মচারী স্বাক্ষর করেছেন।
জানা গেছে, জেলার শেখপাড়া সাচ্চাপীর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট ছিলেন আব্দুল জলিল। তিনি ১ অক্টোবর নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নুনুজ কলিমিয়া আলিম মাদরাসায় উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন।
শিক্ষকদের অভিযোগ, যোগদানের আগে তিনি আগের প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগপত্র, অফিসিয়াল কোনো কাগজপত্র এবং অফিসের আলমারির চাবি, রেজুলেশন বই, সিল ইত্যাদি দেননি। এ পরিস্থিতিতে ওই প্রতিষ্ঠান চালানো খুব কষ্টসাধ্য হচ্ছে। এছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সদস্যদের কাছেও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না ওই সহ-সুপার। তাছাড়া সুপার ও সভাপতির তিনটি পদে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। ওই নিয়োগ বাণিজ্যের টাকা খরচের জন্য ৫৬ খাতে ব্যয় করা তালিকা পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্বে থাকা সহকারী সুপার রুহুল আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সুপার অন্যত্র যোগদান করলেও এই প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগ করেননি। পরে এটি নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। আর্থিক অনিয়ম হয়েছে এটি আমরা অনেক পরে জেনেছি। আমরা একটি টাকা লেনদেনের কপি পেয়েছি। সেখানে তিনি (সুপার) নিজ হাতে লিখেছেন ২৯ লাখ ৬৫ হাজার ২৭০ টাকা হিনেব। সেখানে কোনো জমা উল্লেখ নেই। এই টাকার বিষয়ে সুপার বলেছেন টাকার হিসাব আপনাকে দেয়া যাবে না। কমিটি বুঝবে আর আমি বুঝবো। সভাপতিও তাই বলেছেন।
মাদরাসার সাবেক সুপার আব্দুল জলিল ওই ফর্দি নিজের হাতে লেখা বলে নিশ্চিত করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এই ফর্দি মেইন ফ্যাক্টর। আমি বারবার সভাপতিকে বলেছি এমন কাজ করতে যাবেন না। লিখিত এসব তালিকা করবেন না। লিখিত করার পর স্কিনশর্ট নেয়া হয়েছে এগুলো।
জানতে চাইলে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মাজেদুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গত ১৬ অক্টোবর সুপার পদত্যাগ করেন এবং সেটি নিয়ে মিটিং ডাকা হয়েছিলো। তিনটি পদে সম্প্রতি নিয়োগ হয়েছে। তাদের নিয়োগে কোনো টাকা-পয়সা নেয়া হয়নি। নেয়া হলে সেটি আমার জানা নেই।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তোফাজ্জল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমার জানা মতে সুপার ওই প্রতিষ্ঠানে অক্টোবর ৮ তারিখ পর্যন্ত কাজ করেন এবং তারপর তিনি অক্টোবর ১ তারিখে আবার নুনুজ কলিমিয়া আলিম মাদরাসায় যোগদান করেন। এটা আসলে বিধিসম্মতি হয়নি।
জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শিশির কুমার উপাধ্যায় মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।