ম্যান বুকারজয়ী বিশ্বখ্যাত লেখক সালমান রুশদি জার্মান বুক ট্রেডের মর্যাদাপূর্ণ শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। সাহিত্যকর্ম ও জীবনের প্রতি হুমকি থাকার পরেও ইতিবাচক মনোভাবের কারণে তিনি এই পুরস্কারে ভূষিত হন। আগামী ২২ অক্টোবর ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করবেন।
জার্মান বুক ট্রেড কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৯ জুন সালমান রুশদির বয়স ৭৬ বছর পূর্ণ হয়। এই উপলক্ষে তাকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। খবর- হিন্দুস্তান টাইমস ও এনডিটিভি
সালমান রুশদিকে স্বাধীন চিন্তা ও মতপ্রকাশকারীদের অবিচল রক্ষক আখ্যা দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে মিডনাইটস চিলড্রেন উপন্যাস প্রকাশের সময় থেকে সালমান অভিবাসন ও বিশ্বরাজনীতির ব্যাখ্যা দিয়ে সবাইকে বিস্মিত করে চলেছেন। তিনি প্রজ্ঞা ও রচনায় মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন। তার কাজ সমাজবিধ্বংসী নিপীড়ক গোষ্ঠীর বর্ণনা দেয়।
সালমান রুশদির জন্ম ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের মুম্বাইয়ে। ১৪ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে পড়াশোনা শেষে লেখালেখি শুরু করেন। ‘মিডনাইট চিলড্রেন’ উপন্যাসের জন্য ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে বুকার পুরস্কার লাভ করেন। এ বইটির পর তিনি পেশাদার লেখকে পরিণত হন। এর আগপর্যন্ত তিনি যুক্তরাজ্যে কপিরাইটার হিসেবে কাজ করেছেন।
১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে তার চতুর্থ উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশিত হওয়ার পর ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পরের বছর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি এই লেখককে হত্যার ফতোয়া দিয়েছিলেন। সেই ফতোয়ার তিন দশক পর নিউইয়র্কে এই হামলা চালানো হয়। হামলার পরপরই ঘাতক হাদি মাতারকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই হামলার দুই সপ্তাহ আগে অবশ্য রুশদি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, হামলার ভয় কেটে গেছে, তিনি স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।
এরপর নিউইয়র্কে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে এক সম্মেলনে ছুরিকাঘাতে সালমান এক চোখের দৃষ্টি ও এক হাতের কর্মক্ষমতা হারান। এতেও দমে যাননি। তিনি সৃষ্টিশীল কাজে নিজেকে ধরে রেখেছেন। জার্মান বুক ট্রেড পুরস্কার কর্তৃপক্ষ তার এই প্রাণশক্তিকে তাদের বিবৃতিতে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করেছে।
সালমান রুশদি মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার পাওয়ায় সম্মানিত বোধ করছেন বলে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি পুরস্কারসংশ্লিষ্ট বিচারকদের ধন্যবাদ জানান।