গভীর সমুদ্রে উৎপাদন ও প্রজনন বাড়াতে সোমবার মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। উপকূলীয় এলাকার জেলেদের দাবি, তারা নিষেধাজ্ঞা মানলেও দেশের জলসীমায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায় প্রতিবেশী দেশের জেলেরা। এতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর কাঙ্ক্ষিত মাছ না পাওয়ায় জীবিকা উপার্জন হয় না তাদের। সরকারের দেওয়া প্রণোদনাও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে জেলেরা।
গভীর সাগর থেকে ফেরা বেশিরভাগ ট্রলারেই নেই কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ইলিশ। হতাশ জেলেরা এরই মধ্যে আবারও ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে সমুদ্র থেকে ফিরে এসেছে বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে।
জেলেরা বলছেন, বৈরি আবহাওয়ার কারণে এ বছর জালে মাছ ধরা পড়েছে কম। চড়া মূল্যের বাজারে, দুই মাস উপার্জন বন্ধ থাকায়, পরিবারসহ দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়। তাদের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিদের স্বজনপ্রীতির কারণে সহায়তার চাল পাচ্ছেন না প্রকৃত জেলেরা। নগদ অর্থ সহায়তার দাবি তাদের।
স্থানীয় এক জেলে বলছেন, সরকারের দেওয়া ৮৬ কেজি চালে তাদের সংসার চলে না। মানুষ তো শুধু চাল খেয়েই বেঁচে থাকে না। আরও তো অনেক কিছুই লাগে। তাই প্রণোদনার চালের সঙ্গে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার-সদায় ক্রয়ের জন্য নগদ অর্থের দরকার। জনপ্রতিনিধিরা স্বজন প্রীতি করে জেলেদের জন্য বরাদ্দের চাল দেন অন্য পেশার মানুষদের।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার সময় নিবন্ধিত জেলেদের ৮৬ কেজি করে প্রণোদনার চাল দেওয়ার কথা জানান বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসিন।
দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই উপকূলীয় এলাকা কুয়াকাটায়। জেলেদের অভিযোগ, প্রতিবেশী দেশের জেলেদের মাছ ধরা অব্যাহত থাকায় সমুদ্র থেকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।
জেলেরা বলছেন, সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা মেনে তারা মাছ শিকার বন্ধ রাখেন। তবে এই সময় বাংলাদেশের জলসীমায় নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করে ভারতীয় জেলেরা। ভিনদেশি জেলেদের মাছ শিকার বন্ধ করতে না পারলে নিষেধাজ্ঞার সুফল মিলবে না।
এ বিষয়ে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছে মৎস্য বিভাগ। কলাপাড়ার সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, প্রতিবেশী দেশের জেলেরা যেন নিষেধাজ্ঞার সময় দেশের জলসীমায় ঢুকতে না পারে সে জন্য কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশদের টহল অব্যাহত থাকবে।
নোয়াখালীতে ৬৫ দিন সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখতে মৎস্যজীবীদের প্রণোদনা দেওয়াসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন।