সৌদি আরবে তীব্র গরমে পালিত হচ্ছে পবিত্র হজ। এরই মধ্যে তিনদিনে হিটস্ট্রোকের শিকার হয়েছেন সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি হজযাত্রী। এদিকে আজ একদিনেই সাত বাংলাদেশি হাজির মৃত্যু হয়েছে। এবার হজে যাওয়া লক্ষাধিক বাংলাদেশির মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সৌদি আরবে অবস্থানকালে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। কেউ কেউ স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) বিকেলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম এই তথ্য জানিয়েছেন।
হাব সভাপতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে জানান, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত সৌদি আরবে মোট মৃত হাজির সংখ্যা ৪৩ জন। এর মধ্যে আজ এক দিনেই সাতজন হাজি মারা গেছেন বলে জানান হাব সভাপতি।
এদিকে সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার আমিরাতভিত্তিক দৈনিক গালফ নিউজের খবরে বলা হয়, হজের মোট তিন দিনে মক্কার প্রচণ্ড তাপ ও গরমে হিটস্ট্রোকের শিকার হয়েছেন সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি হজযাত্রী। এর বাইরে গত ৩৯ দিনে অন্তত এক লাখ ১১ হাজার ৭৬১ জন হজযাত্রী তীব্র গরমজনিত কারণে অসুস্থতার শিকার হয়ে হাসপাতাল এবং অস্থায়ী স্বাস্থ্যশিবিরগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. মোহম্মদ আল আবদুল আলী।
চলতি জুন মাসের প্রায় প্রতিদিনই সৌদির গড় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি থেকে ৪৫ ডিগ্রির মধ্যে। এতে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা লাখ লাখ হাজি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অনেকে মারাও যাচ্ছেন।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করলে তার মরদেহ সেখানেই দাফন করা হয়। মৃতদেহ তার নিজ দেশে নিতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না।
মক্কায় হজযাত্রী মারা গেলে মসজিদুল হারামে জানাজা হয়। আর মদিনায় মারা গেলে মসজিদে নববিতে জানাজা হয়। জেদ্দায় মারা গেলে জেদ্দায় জানাজা হয়। জানাজা শেষে মক্কার শারায়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। মদিনার জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে অথবা জেদ্দায় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
গত ২৭ জুন মঙ্গলবার পালিত হয় পবিত্র হজ। আগামীকাল শেষ হচ্ছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। ২ জুলাই রোববার থেকে শুরু হচ্ছে হজের ফিরতি ফ্লাইট। চলবে ২ আগস্ট পর্যন্ত যারা প্রথমে মদিনা গিয়েছেন তারা এবার দেশে ফিরবেন। আর যারা মদিনায় যানটি তারা মদিনায় যাবেন। সেখান থেকেই তাদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
চলতি বছর ২৫ লাখেরও বেশি মানুষ হজ করতে গিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে।