পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে দালালের খপ্পরে পড়ে সৌদি আরবে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরেছেন হাফিজুর রহমান (৪২) নামে এক শিক্ষক। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জেদ্দা শহরের একটি ভবন থেকে নিহতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত কলেজ শিক্ষক হাফিজুর রহমান কলারোয়া উপজেলার কৃপারামপুর গ্রামের রোস্তম আলী সানার ছেলে। তিনি ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে কলারোয়ার বামনখালী ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিষয়ের প্রভাষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর তিনি সৌদি আরব গিয়েছিলেন। বর্তমানে নিহতের লাশ দেশে আনার চেষ্টা করছে পরিবার।
এ ঘটনায় তিন দালালকে অভিযুক্ত করে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে কলারোয়া থানায় মামলা করেছেন তার বাবা রোস্তম আলী সানা। অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার সিদ্দিকুর রহমান খাঁ তার দুই ছেলে মোকলেছুর রহমান খাঁ ও জুয়েল খাঁ।
নিহতের দুলাভাই আবুল কালাম আজাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তার শ্যালক ম্যানেজমেন্ট শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বর একই এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মোকলেছুর রহমান খাঁ ও জুয়েল খাঁর খপ্পরে পড়ে পরিবারের স্বচ্ছলতার ফেরাতে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। এর আগে মোকলেছুর প্রবাসে পাঠানোর সুবাদে বিভিন্ন সময়ে ওই তার কাছ থেকে মোট সাড়ে ৬ লাখ টাকা নেন। পরে প্রবাসে সে কাজ না পেয়ে খুব কষ্টে জীবনযাপন করছিল। কিছুদিন আগে মোকলেছুর সৌদি গিয়ে তার কাছে টাকা পাবে না বলে জোর করে জবানবন্দি ভিডিও ধারণ করে। এরপর বিষয়টি পরিবারকে জানালে চলতি বছরের ১৫ মে তাকে দেশে ফেরত আনার কথা বলে মোকলেছুরের বাবা সিদ্দিকুর রহমান খাঁ এশিয়া ব্যাংকের মাধ্যমে পুনরায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা নেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাতে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বিষয়টি তারা পরিবারকে জানায়। এরপর ছেলে হত্যার বিচার দাবিতে তার বাবা রোস্তম আলী বাদি হয়ে অভিযুক্ত তিনজনের নামে গত শনিবার কলারোয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই দিন রাতে মোকলেছুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিহতের বাবা রোস্তম আলী সানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে ছেলে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে। রাতে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ । আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো মানুষ না। তাকে পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলেকে বিদেশে নিয়ে ওরা মেরে ফেলেছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। ছেলের লাশ এখন দেশে আনতে পারছিনা। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। ইতোপূর্বে মোকলেছুর নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।