প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার স্কাউট আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশে স্কাউটিং সম্প্রসারণ ও স্কাউট শতাব্দী ভবন নির্মাণ প্রকল্প’, ৪৮ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে‘সিলেট অঞ্চল ও মৌলভীবাজার জেলায় স্কাউট ভবন নির্মাণ প্রকল্প’, এবং ৪৮ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ‘আঞ্চলিক স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, লালমাই উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করছি।’
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ‘বাংলাদেশ স্কাউটস এর ৫১তম বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলে তিনি। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ৩৫৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ (৪র্থ পর্যায়)’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কাব স্কাউটদের প্রশিক্ষণের জন্য ‘জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মৌচাক, গাজীপুর’ এর অনুকূলে ৯৫ একর বনভূমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে । চট্টগ্রামে রোভার স্কাউটদের জন্য একটি এ্যাডভেঞ্চার ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের লক্ষ্যে ১৮৮ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, তিনি দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দু’টি করে কাব স্কাউট, স্কাউট ও রোভার স্কাউট দল খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। ছেলেদের পাশাপাশি গার্ল স্কাউট এবং মাদ্রাসাসমূহে স্কাউট দল গঠন করতে হবে।
বাংলাদেশ স্কাউটস এর ৫১তম বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষ্যে সকল রোভার, স্কাউট, কাব এবং স্কাউট নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সালের ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ বয় স্কাউট সমিতি গঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ ১১১ জারি করার মাধ্যমে ১৯৭২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ স্কাউটসকে সরকারি স্বীকৃতি প্রদান করেন। তাঁর অনুপ্রেরণা এবং উদ্যোগের ফলে ১৯৭৪ সালের ১ জুন ১০৫তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্কাউটস বিশ্ব স্কাউট সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি স্বাধীন দেশে প্রথম প্রধান স্কাউটের সম্মান অর্জন করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের শিশু, কিশোর ও যুবকদের প্রযুক্তি জ্ঞাননির্ভর দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্কাউটস প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন সেবাধর্মী কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্কাউটরা নিজেদেরকে যুগোপযোগী নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলছে। আমি জেনে আনন্দিত যে, আমাদের সমাজের অবহেলিত পথ শিশু এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরাও স্কাউটিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে।’
স্কাউট সদস্যরা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন উদ্ভাবনী ও জনহিতকর কার্যক্রমের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের প্রতিটি সেক্টরে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমরা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। আমরাই ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট, উন্নত, সুখী-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব, ইনশাল¬াহ ’৷
প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, বাংলাদেশ স্কাউটস এর প্রতিটি সদস্য সর্বোচ্চ দেশপ্রেম ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলাদেশ’গড়ে তুলতে একযোগে কাজ করবে। তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস এর ৫১তম বার্ষিক সাধারণ সভা’র সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন।