স্কুলে না এসেও নিয়মিত বেতন নিতেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্ত্রী - দৈনিকশিক্ষা

স্কুলে না এসেও নিয়মিত বেতন নিতেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্ত্রী

দৈনিক শিক্ষাডটকম, খুলনা |

খুলনা-৫ আসনের (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের স্ত্রী উষা রানী চন্দ। তিনি ডুমুরিয়ায় রাজিবপুর-মৈখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা । মাসে দু-এক দিন স্কুলে এলেও নিতেন না কোনো ক্লাস, লাইব্রেরিতে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে চলে যেতেন। অবশ্য প্রতিদিনই হাজিরা খাতায় নাম ওঠে তার। মাস শেষে তোলেন বেতনের টাকাও।

ডুমুরিয়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে খুলনার ডুমুরিয়ায় রাজিবপুর ও মৈখালী গ্রামে গড়ে ওঠে রাজিবপুর-মৈখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন উলা গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ চন্দ্র চন্দের স্ত্রী উষা রানী চন্দ। প্রায় ৩৬ বছর ধরে একই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন তিনি। তার মূল বেতন ২১ হাজার ৩৮০ টাকা। বর্তমানে প্রতি মাসে বেতন, ডিপিএফ ও কল্যাণ তহবিলসহ ৩২ হাজার ৭০১ টাকা পান। তবে ডিপিএফ ও কল্যাণ তহবিল বাদে প্রতি মাসে বেতন তোলেন ২৯ হাজার ১৪১ টাকা।

উষার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা ও বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের অভিযোগ, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ খুলনা-৫ আসনে (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উপনির্বাচনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৩, ২০১৮ এবং ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দসহ পাঁচবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী থেকে তিনি মন্ত্রী এবং সর্বশেষ ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ৬ অক্টোবর অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে তিনি বিজিবির হাতে আটক হন। তবে তার স্ত্রী উষা রানী চন্দ কোথায় আছেন তা কেউ জানে না।

বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. কামরুল ইসলাম শেখ ও মো. মিজানুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার প্রথম দিকে সহকারী শিক্ষিকা উষা রানী চন্দ আসতেন ও ক্লাসও নিতেন। তবে গত ১৫ বছর তিনি বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসেন না। মাসে দুদিন আসেন। তিনি না আসার কারণে তিন থেকে চার বছর আগে কিছুদিন ক্লাস নিতে দুজন বহিরাগত শিক্ষকও ভাড়া করেন। কিছুদিন ক্লাস নিয়ে তারাও চলে যান। তার অনুপস্থিতিতে ছেলেমেয়েদের লেখাপাড়ায় অনেক ক্ষতি হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মো. রফিকুল ইসলামজানান, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা উষা রানী চন্দ পলাতক রয়েছেন। এখন মোটেও বিদ্যালয়ে আসেন না। আগেও তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতেন না। মন্ত্রীর স্ত্রী হওয়ার কারণে এত দিন কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্চিতা বাহাদুর জানান, উষা রানী চন্দের আগের বিষয়ে তিনি জানেন না। তবে তিনি বিদ্যালয়ে ২০২২ সালে যোগ দেওয়ার পর মাঝেমধ্যে বিদ্যালয়ে আসতেন। তখন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতেন। সরকার পতনের পর তিনি ১৫ আগস্ট ও ১৫ সেপ্টেম্বর মেডিকেল ছুটির জন্য লোক মারফত আবেদন পাঠান। সেই আবেদন তিনি শিক্ষা অফিসে পৌঁছে দিয়েছেন।

ডুমুরিয়া প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, তিনি এই কর্মস্থলে এক বছর হলো এসেছেন। এখানে আসার পর সহকারী শিক্ষিকা উষা রানী চন্দের বিদ্যালয়ের অনিয়মিত থাকার বিষয় নলেজে ছিল। শুধু তিনিই না, বেশিরভাগ মানুষই বিষয়টি জানেন। তবে তার স্বামী সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি।

খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. অহিদুল আলম বলেন, আগে মুখ খুলতে পারেননি কেউ। কেউ অভিযোগও করেননি। ফলে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এখন কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার উষা রানী চন্দের ডুমুরিয়া সদরের বাড়ি ও উলা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

প্রথম দিনের ভাইভায় যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন প্রার্থীরা - dainik shiksha প্রথম দিনের ভাইভায় যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন প্রার্থীরা পাঠ্যবইয়ে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়া যেভাবে আড়ালে - dainik shiksha পাঠ্যবইয়ে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়া যেভাবে আড়ালে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি দখলে বেপরোয়া ছিলেন সাদিক আব্দুল্লাহ - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি দখলে বেপরোয়া ছিলেন সাদিক আব্দুল্লাহ জাতি গঠনের সুযোগ ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha জাতি গঠনের সুযোগ ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ - dainik shiksha প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035572052001953