টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের দারগালী নগর সুন্দইল পাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মনোনীত প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে পরীক্ষার আগেই প্রশ্নফাঁস করা হয়েছে। তবে নিয়োগ সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নিয়োগ কমিটির সদস্যদের দাবি, যিনি প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তুলেছেন তিনি নিজেই এ নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছেন। এদিকে এ অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে বলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক সেলিম আল মামুন এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো ফিরোজ আহমেদ টিটুর মোটা অংকের টাকা নিয়ে অনিয়ম করে নিয়োগ দিয়েছেন। তারা প্রার্থীর কাছে প্রশ্নফাঁস করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, দারগালী নগর সুন্দইল পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকারি বিধি মোতাবেক সম্প্রতি একজন অফিস সহায়ক, একজন আয়া ও একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে তিনটি পদে মোট ১৬ জন প্রার্থী আবেদন করেন। গত ২৮ জুলাই বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১৩ জন প্রার্থী লিখিত পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। আয়া পদে রুজিনা নামে এক প্রার্থীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। ওই প্রার্থীর কাছ থেকে নগদ চার লাখ টাকা নিয়ে নেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। তিনটি নিয়োগে প্রায় ৩০ লাখ টাকার একটি বাণিজ্য করেছে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। এই অবৈধ নিয়োগ বন্ধ করে নতুন নিয়োগের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
জানতে চাইলে নিয়োগ কমিটির এক সদস্য দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। একজন ইউপি সদস্য নিয়োগে প্রশ্নফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি ইউএনও মহোদয়কে অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু ওই ইউপি সদস্য ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিরও সদস্য। ২৮ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষার পর ৩ আগস্ট ফল প্রকাশ করা হয়। তখন তিনি কোনো অভিযোগ তোলেননি। কিন্তু ১০ আগস্ট তিনি ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
নিয়োগের প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে মন্তব্য জানতে প্রধান শিক্ষক সেলিম আল মামুন ও প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফিরোজ আহমেদ টিটুর সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। তারা ফোন রিসিভ করেননি। তবে স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, তারা নিয়োগে অনিয়ম ও প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি নিয়মানুযায়ী নিয়োগের সব কার্যক্রম চালিয়েছি। তবে নিয়োগের প্রশ্নফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বলে শুনেছি। ইউএনও মহোদয় এ অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।