এ বছর দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণির নতুন বইয়ের কমবেশি সংকট রয়েছে। কবে নাগাদ এ সংকট কাটবে তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। তবে রাজধানীর বিভিন্ন বই এর দোকানে ঠিকই মিলছে প্রথম থেকে দশম শ্রেণির সব বিষয়ের পাঠ্যবই। আর সন্তানদের পিছিয়ে পড়ার শঙ্কায় অভিভাবকরা এসব বই অধিক দামে খোলাবাজার থেকে সংগ্রহ করছেন। কিন্ডারগার্টেনগুলো এই বইয়ের অন্যতম ক্রেতা। বিনামূল্যে বিতরণের এসব পাঠ্যবই বাজারে বিক্রির সত্যতা পেয়েছে এনসিটিবিও।
রাজধানীর নীলক্ষেত, বাংলাবাজার ও সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় বেশ কিছু লাইব্রেরি বিনামূল্যের বই বিক্রি করছে। যদিও বিনামূল্যের বই বিক্রির জন্য সতর্ক দোকানিরা। তারা অনেক প্রশ্ন করে যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হয়ে তবেই বই আছে বলে স্বীকার করছেন। ক্রেতার গতিবিধি এবং উপস্থাপনা ভেদে গোপনে বই বিক্রি করছেন তারা।
গতকাল শনিবার বিকেলে অভিভাবক পরিচয়ে বাংলাবাজার এলাকার বেশকয়েকটি লাইব্রেরি ও ফুটপাতের দোকানে বিনামূল্যের বই কেনার চেষ্টা করা হলেও দোকানিদের এ সতর্কতা দেখা যায়। বাংলাবাজার এলাকার বেশিরভাগ দোকানি বই নেই বলে জানান।
তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, তিনি ফুটপাতের একটি দোকান থেকে বই কিনেছেন। পৃষ্ঠা, শ্রেণি এবং বিষয় ভেদে প্রতিটি বই ১০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন কারিকুলামের বইও পাওয়া যাচ্ছে। তবে, নতুন কারিকুলামের বইয়ের দাম কিছুটা বেশি।
ওই অভিভাবকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী দোকানে ছদ্মবেশে বই কিনতে গেলে দোকানি আজ রোববার বই নিতে যাওয়ার জন্য বলেন। তিনি জানান, এক স্কুল থেকে বই সংগ্রহ করে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, খোলা বাজারে বই বিক্রি হচ্ছে এমন তথ্য আমরাও পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আমরা ছদ্মবেশে আটজন ক্রেতা পাঠিয়েছিলাম। রাজধানীর নীলক্ষেত এবং ভিকারুননিসা স্কুলের আশপাশে এসব বই বিক্রি হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। আমাদের পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় দুটি বিশেষ সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি৷
স্কুলে বই সংকট থাকার পরেও এসব বই কোন জায়গা থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের চাহিদার তুলনায় বেশি বই নিয়েছে। অতিরিক্ত বই স্কুল থেকেই আবার দোকানে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে প্রধান শিক্ষকরা বেশি বই নিয়ে বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন এমন উদাহরণও আছে। ধরা পড়ছে। এছাড়াও আর অন্য কি কারণ রয়েছে সেটি জানতে আমরা কাজ করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বই বিতরণ নিয়ে একটি অটোমেশন পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ প্রক্রিয়ায় আমরা কত বই ছাপিয়েছি, কোন স্কুলে কত বই প্রয়োজন, কতগুলো স্টক রয়েছে, আরও কত বই লাগতে পারে এমন নানা তথ্য পাবো। এ সংক্রান্ত একটি অ্যাপস দ্রুতই চালু করা হবে।