দিন দিন বাড়ছে স্কুল ব্যাংকিংয়ের জনপ্রিয়তা। একই সঙ্গে বাড়ছে ছাত্রছাত্রীদের টাকা জমার পরিমাণও। সদ্য বিদায়ী ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে স্কুল ব্যাংকিংয়ের হিসাবে আমানত জমা পড়েছে ২৭ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে- ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাবে আমানত জমা পড়েছিল ২৭ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। এর আগের বছর ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে যার পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৯০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ২ হাজার ৪৯ কোটি টাকা।
দেশের জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রী। স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সঞ্চয়ের অভ্যাস ছেলেমেয়েদের মনে এনে দেবে আর্থিক শৃঙ্খলা, যা তাদের সুশৃঙ্খল জীবন গঠনেও সহায়ক হবে। করোনাকালে স্কুল কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও করোনা পরবর্তীতে এ কার্যক্রম জোরদার করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তথ্য মতে- যাদের বয়স ১১ থেকে ১৮ বছর অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের বাবা-মা অথবা বৈধ অভিভাবকের সঙ্গে যৌথ নামে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। মাত্র ১০০ টাকা প্রাথমিক জমা দিয়ে বাংলাদেশের বেশির ভাগ ব্যাংক শাখায় এ হিসাব খোলা যায়। এ হিসাবে কোনো ফি বা চার্জ আরোপ করা হয় না। এমনকি ন্যূনতম স্থিতি রাখার বাধ্যবাধকতাও নেই।
ব্যাংকগুলোতে স্কুল ব্যাংকিংয়ে হিসাব খোলা অব্যাহত রয়েছে। ফলে নভেম্বরে হিসাব খোলার পরিমাণ ও আমানত আগের মাসের তুলনায় বেড়েছে।
এছাড়া রেমিট্যান্স কমার কারণে চাপ বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। এতে ধারাবাহিকভাবে কমছে রিজার্ভ। একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির ব্যাপক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ পরিবার আর্থিক সংকটে ভুগছে। ফলে স্কুল ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে কমছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের হিসাব ছিলো ৩১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০৬টি। আগস্টে এ ধরনের হিসাব খোলা হয় ৩১ লাখ ৮২ হাজার ৬৬১টি। এরপরে সেপ্টেম্বরে এসে স্কুল ব্যাংকিংয়ের হিসাবের পরিমাণ আরো কমে দাঁড়ায় ৩১ লাখ ৮১ হাজার ৮৬০টি। তবে ডিসেম্বর শেষে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ লাখ ৬০৪টি।