বরগুনার তালতলীতে স্কুল ভবন না থাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের কয়েকটি কক্ষে। পরিষদে কোনো কার্যক্রম থাকলে তখন বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলার নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নে ১৯৪৩খ্রিষ্টাব্দে ২১ নম্বর নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এরপর ১৯৯৩খ্রিষ্টাব্দে স্কুল ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দেনিলামে ভবনটি বিক্রি করা হলে পাশর্^বর্তী শারিকখালী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে সাময়িক পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। পাঁচ বছর ধরে পাঠদান চলছে এই ইউপি ভবনের কক্ষে। বর্তমানে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২৬২ শিক্ষার্থীর জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। কিছু ছাত্রছাত্রী কক্ষে ও কিছু বারান্দায় বসিয়ে পাঠদান করাতে হচ্ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ পেলে সেই টাকা দিয়ে ইউপি ভবনের নিচতলায় সাময়িক পাঠদানের জন্য টিন দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়। বর্তমানে ইউপি ভবনে পরিষদের কার্যক্রমের কারণে পাঠদানের কোনো পরিবেশ নেই। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থায় দ্রুত স্কুল ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুহান, ইমরান ও হাফিজুর জানায়, ভবন না থাকায় তাদের অনেক কষ্ট করে ক্লাস করতে হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে লোকজন এলে তাদের ক্লাস বন্ধ রাখতে হয়। তারা দ্রুত তাদের বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
একজন অভিভাবক বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ে সব সময় মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নেওয়া হয়। পড়াশোনা ভালো হয়। পিএসসি পরীক্ষার ফলাফলও খুবই ভালো। তবে ভবন না থাকায় পাঠদানে খুবই সমস্যা হচ্ছে। অতি দ্রুত স্কুল ভবনটি নির্মাণের দাবি করছি।’
এ বিষয়ে নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে আমাদের স্কুল ভবন নিলামে বিক্রি করা হয়। এরপর থেকেই ইউনিয়ন ভবনে পাঠদান শুরু করি। এখানে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করাতে খুব কষ্ট হয়। তা ছাড়া আমার বিদ্যালয়ে প্রায়ই মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নেওয়া হয়। তবে বৃষ্টির দিনে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই দ্রুত বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে বিগত দিনের পরীক্ষার ফলাফল অনেক ভালো। তবে ভবন না থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আমরা ওই স্কুল ভবনের চাহিদা একাধিকবার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। পাস হলে দ্রুতই ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।’
এলজিইডির তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী ইমতিয়াজ হোসাইন রাসেল গত মঙ্গলবার জানান, স্কুলের ভবন নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।