স্কুলের মাঠ জুড়েই বসেছে যেন নির্মাণসামগ্রীর হাট। প্রচণ্ড শব্দ করে ক্ষণে ক্ষণে স্কুল মাঠে প্রবেশ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বড় বড় সব ভারী যানবাহন। সেই সঙ্গে বালি, খোয়ার ময়লা আবর্জনা ও টায়ার জ্বালানো পিচের ধোঁয়া উড়ে ক্লাসরুমে ঢুকছে।
এতে স্কুলের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা ধোঁয়ার ঝাঁজে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার খড়াশুনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিপুল পরিমাণ নির্মাণসামগ্রী ও ভারী যানবাহন রাখায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের খেলার মাঠে সড়ক সংস্কারের নির্মাণসামগ্রী পড়ে আছে। মাঠের অধিকাংশ জায়গা জুড়ে ফেলে রাখা হয়েছে ইট,পাথর, বালি ও পিচের ব্রেল। মাঠের মধ্যে রয়েছে ভারী-ভারী যন্ত্র। সেখানে যত্রতত্র ওঠা-নামা করছে পাথরবোঝাই ট্রাক ও ঠিকাদারের কাজে ব্যবহারিত ভারী যন্ত্র। পাথর ও বালি মিশ্রিত করা প্লান্ট মেশিন বিকট শব্দে চলছে।
নির্মাণসামগ্রীর ধুলাবালি এবং বিটুমিন গলানোর কাজে ব্যবহৃত টায়ার পোড়ানোর তীব্র কালো ধোঁয়ায় এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে। ফলে স্কুল মাঠটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে।
শিশু-কিশোরদের মাঠে খেলাধুলা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক জমির হোসেন জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের তৈলকূপ গ্রামে রাস্তার কাজ চলছে। এ কারণে তাদের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়েই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক আমাদের কাছে না শুনেই খড়াশুনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ঠিকাদার কাজে ব্যবহারিত যন্ত্রপাতি রেখেছে।
তিনি বলেন, স্কুল বন্ধ থাকার সুযোগে তারা এ কাজটি করেছে। এ বিষয়ে তিনি স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছেন। তারা এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। খড়াশুনী গ্রামের বাসিন্দা মেহেদী হাসান বলেন, স্কুলের খেলার মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখা বেআইনি। অথচ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেই কাজটিই করেছে। এতে ছেলেদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে।
কাজের ঠিকাদার মোশাররফ হোসেন মুছা বলেন, তারা দু’একদিনের মধ্যে সকল মালামাল সরিয়ে নিবেন। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত জায়গা না পাওয়ায় স্কুল মাঠে মালামাল রাখতে হয়েছিল। তাছাড়া সে সময় স্কুলটি বন্ধ ছিল। নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম রিপন জানান, ঠিকাদারকে মালামাল সরিয়ে নিতে একাধিকবার বলেছি, কিন্তু তারা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খালেকুজ্জামান জানান, বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছেন। আমি ছুটিতে থাকায় ব্যবস্থা নিতে পারছি না। অফিসে ফিরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।