রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ছোড়া গুলিতে চোখ হারিয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম। অন্যদিকে অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছেন না আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন।
এই শিক্ষার্থীরা বলছেন, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অর্থনৈতিক কোনো সহযোগিতা পাইনি। তবে চিকিৎসার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ জানান, এই শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ব্যয় বহনে কাজ চলছে। তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় বাসের সিটে বসা নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। সেদিন মধ্যরাত পর্যন্ত চলে এই সংঘর্ষ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এতে চোখে গুরুতর আঘাত পান তিন শিক্ষার্থী। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয় আমিনুল ইসলাম, মিসবাহুল ইসলাম ও নাইম ইসলামকে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিদেশে চিকিৎসার কথা জানান চিকিৎসক। ফলে ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসা নেন আমিনুল ইসলাম এবং মিসবাহুল ইসলাম। তবে সেখানে চিকিৎসা নিয়েও এক চোখ হারিয়েছেন আমিনুল এবং ঝাপসা দেখছেন মিসবাহুল। কিন্তু অর্থাভাবে ভারতে যেতে পারছেন না আল আমিন।
শিক্ষার্থী আল আমিন জানান, ভারতে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পরিবার থেকে বহন করার সক্ষমতা নেই। তাই এখন পর্যন্ত যেতে পারিনি। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনার দুই মাস হলেও শেষ হয়নি তদন্ত কার্যক্রম। অথচ কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমার নির্দেশ ছিল। তদন্তের ব্যাপারে কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবির বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের কার্যক্রম প্রায় শেষ হয়েছে। পরের সপ্তাহের শুরুতেই এটা জমা দেওয়া হবে।