দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তি কমিয়ে গবেষণায় মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) দিবস উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ পরামর্শ দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক তথা সম্মান ডিগ্রিকে টার্মিনাল ডিগ্রি হিসেবে গণ্য করা উচিত। একইসঙ্গে, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা কমিয়ে গবেষণায় বেশি নজর দিতে হবে। অন্যথায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে যাবে। তিনি প্রকৌশল শিক্ষায় স্নাতক পর্যায়ে ৪০ জন এবং সামাজিব বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির পরামর্শ দেন।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করতে পারে। এই বৃত্তির অর্থের পরিমাণ এমন হতে হবে যাতে একজন শিক্ষার্থী বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করতে পারেন। এছাড়া, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঋণের ব্যবস্থাও করতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করেন।
ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসন বিভাগের এ সদস্য আরো বলেন, শিক্ষার্থী ও বিভাগের সংখ্যা দিয়ে কোনো বিশ্ববদ্যিালয়ের গুণগতমান পরিমাপ করা যায় না। সংখ্যা না বাড়িয়ে কিভাবে শিক্ষা ও গবেষণায় মান অর্জন করা যায় সেদিকে আমাদের বেশি নজর দিতে হবে।
নতুন বিভাগ খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাজারে চাহিদা ও চাকরির সুযোগ আছে এমন বিভাগ খোলার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। বিভাগ খোলার সময় প্রয়োজনীয় জনবল ও অবকাঠামো আছে কি-না এসব বিষয়ে দেখতে হবে। বিভাগ খুলে জনবল ও অবকাঠামো সংকটের কথা বলা যাবে না বলে তিনি জানান। এছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প যথাসময়ে এবং সঠিক নিয়মে শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তিনি আহ্বান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মিহির রঞ্জন হালদারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আবু নঈম শেখ, কুয়েটের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সোবহান মিয়া।
সভায় ভিসি অধ্যাপক ড. মিহির রঞ্জন হালদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে হবে এবং প্রকৌশল শিক্ষায় কুয়েটকে শীর্ষ স্থান অর্জন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার এক বছরের মধ্যে জনবল কাঠামো তৈরি, প্রকল্পের অর্থ ছাড় করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে এখন পূর্ণ মনোযোগ দেয়া হচ্ছে। এলক্ষ্যে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও লেখাপড়ার পরিবেশ উন্নয়নে তিনি সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
প্রসঙ্গত, কুয়েটের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।