অবশেষে সড়ক আইনের বিধিমালা জারি করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ পাস হওয়ার ৪ বছর পর এই বিধিমালা জারি করা হলো। বিধিমালায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ ৫ লাখ টাকা। চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা না থাকলে ৩ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকলে ১ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।
বিধিমালা অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণের দাবিগুলো ১২ সদস্যের একটি ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে। বিআরটিএর চেয়ারম্যান হবেন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নতুন সড়ক আইন পাস হলেও বিধিমালা না থাকায় ক্ষতিপূরণসহ বেশ কিছু বিষয়ের কোনো কার্যকারিতা ছিল না। বিধিমালা হওয়ায় এখন দ্রুতই সড়ক আইন পুরোপুরি কার্যকর হবে।
এ ছাড়া বিধিমালায় বলা আছে, আর্থিক সহায়তার জন্য আর্থিক সহায়তা তহবিল থাকবে এবং এই তহবিলে মোটরযান মালিক প্রতিটি মোটরযানে বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণে বার্ষিক বা এককালীন চাঁদা দেবেন। এ তহবিল গঠনে মোটরসাইকেলের মালিককে এককালীন ১০০০ টাকা দিতে হবে। বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও প্রাইম মুভারের জন্য বার্ষিক দেড় হাজার টাকা দিতে হবে। মিনিবাস, মিনি ট্রাক ও পিকআপের জন্য বার্ষিক ৭৫০ টাকা ধার্য হয়েছে। কার, জিপ ও মাইক্রোবাসের জন্য বার্ষিক ৫০০ টাকা দিতে হবে। আর থ্রি-হুইলার ও অন্যদের বার্ষিক ৩০০ টাকা দিতে হবে। অন্যান্য যানের চাঁদা দেয়ার নির্দিষ্ট মেয়াদ চলে গেলে প্রতি মাস বা মাসের অংশ বিশেষের জন্য ৫০ টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হবে। তবে সরকারের পূর্ব অনুমোদন নিয়ে ট্রাস্টি বোর্ড প্রয়োজনে সময়-সময় এই চাঁদার পরিমাণ কমাতে বা বাড়াতে পারবে।
আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য ফরম অনুযায়ী দুর্ঘটনা ঘটার সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদন দাখিল করার তারিখ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বোর্ডের চেয়ারম্যান অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন। এই কমিটি ৩০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন বোর্ডের কাছে দেবে।
প্রতিবেদন দাখিলের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ট্রাস্টি বোর্ড আবেদন মঞ্জুরপূর্বক আর্থিক সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা করবে। আর্থিক সহায়তার টাকা আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাবে ‘প্রাপকের হিসাবে প্রদেয়’ চেকের মাধ্যমে দিতে হবে।