ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলে বরাদ্দকৃত সিট বুঝে পেতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে এক শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থীর নাম জালাল আহমদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, গত সোমবার (৫ জুন) সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবীর মাধ্যমে উকিল নোটিশটি পাঠান তিনি। গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এ নোটিশ পৌঁছেছে।
ওই লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাস থেকে তাকে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৫৮ নাম্বার কক্ষের একটি আবাসিক আসন বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু ওই কক্ষে থাকা একজন জ্যৈষ্ঠ ছাত্রের অনুরোধে এবং সমঝোতার প্রেক্ষিতে নোটিশ দাতাকে (জালাল আহমেদ) ৪৫৮ নম্বর কক্ষের পরিবর্তে ৩৫১ নম্বর কক্ষে থাকতে দেয়া হয়। কিছুদিন পর তাকে ৪৫৮ নম্বর কক্ষের পরিবর্তে ৪৬২ নাম্বার কক্ষ বরাদ দেয়া হয়। কিন্তু ওই কক্ষে ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম রসুল বিপ্লব অবৈধভাবে জোরপূর্বক অবস্থান করায় তিনি তার কক্ষে উঠতে পারেনি।
এতে আরো বলা হয়, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে মার্চে ওই আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে এবং ছাত্রদল কর্মী হিসেবে আখ্যায়িত করে জালাল আহমেদকে ৩৫১ নম্বর কক্ষ থেকে মারধর করে। জোরপূর্বক বের করে দেয়া হয়। ঐ ঘটনার বিচার চেয়ে হলের আবাসিক সিট বুঝিয়ে পেতে এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জালাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবরে অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়াও হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর আবেদন করেও হলের আবাসিক কার্ড না পাওয়া৷ যার ফলে মেডিক্যাল সেন্টারের হেলথ সেবা, পরিবহন সেবা থেকে বঞ্চিত হবার ঘটনা। হলের ঠিকানা ব্যবহার করাতে বিভিন্ন চিঠি ফেরত যাওয়ার মত বিষয়টি ওই লিগ্যাল নোটিশে তুলে ধরা হয়।
লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর ব্যাপারে জালাল আহমদ বলেন, হলে থাকতে না পারার কারণে আমার একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। তাই হলের আবাসিক সিট বুঝিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি। একই সঙ্গে হল থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন দায়ের করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নোটিশটি পেয়েছি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি তাকে বিভিন্ন সময় হলের বিভিন্ন কক্ষ পরিবর্তন করে পাঠানো হলে, তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ আছে। সেই কক্ষগুলোর অনেক শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছে। তবে হলের সিট দেয়ার বিষয়টি আমার এখতিয়ারে নেই, এটি হল প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব।
এদিকে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সঙ্গে। তবে তিনি এখনো কোন লিগ্যাল নোটিশ হাতে পাননি বলে জানান।