এবার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ তাজিকিস্তানে হিজাব ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ দেশটির শতকরা ৯৬ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। সেখানে হিজাবকে ‘এলিয়েন গার্মেন্ট’ বা অনাহূত, আগন্তুক পোশাক বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা যারা অমান্য করবেন তাদের বিরুদ্ধে বড় রকমের জরিমানার বিধান করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঈদের দিনে বড়দের কাছ থেকে শিশুরা যে ‘ঈদি’ বা ঈদ সেলামি পায় সেই রীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়া টুডে, দ্য প্রিন্ট, হিন্দুস্তান টাইমস। এতে বলা হয়, মধ্য এশিয়ার এ দেশটি নিজেদেরকে ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে পরিচয় দিতে চায়। এ জন্য তারা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় এক কোটি। এর মধ্যে শতকরা কমপক্ষে ৯৬ ভাগই মুসলিম।
তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রেহমন হিজাবকে একটি আগন্তক পোশাক হিসেবে অভিহিত করেছেন। সৌদি আরবে নারীদের বোরকা, হিজাব নিষিদ্ধ করার যে বিল আনা হয়েছে, তাতে সম্মতি দিয়েছেন। যারা এই আইন লঙ্ঘন করবেন তাদেরকে আট হাজার থেকে ৬৫ হাজার সোমোনি (স্থানীয় মুদ্রা) জরিমানা করা হবে। এই অর্থ ভারতীয় মুদ্রায় ৬০,৫৬০ রুপি থেকে ৫ লাখ রুপি। সরকারি কর্মকর্তা এবং ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ- যারা এই আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হবেন তাদেরকে আরও বেশি জরিমানা করা হবে। এই জরিমানার অংক ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ সোমোনি। এক্ষেত্রে রিপোর্টে তাজিক বার্তা সংস্থা এশিয়া-প্লাস নিউজকেও উদ্ধৃত করা হয়েছে। অতিরিক্ত খরচে বিধিনিষেধ সংক্রান্ত আইনেও স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রেহমন। ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা এবং নওরোজ উৎসবের সময় ‘ঈদি’ রীতিকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশটির রিলিজিয়ন কমিটির প্রধান সুলাইমান দাভলাতজোদা স্থানীয় রেডিও ওজোদিকে বলেছেন, ঈদি বন্ধের কারণ হলো- এর মধ্য দিয়ে পবিত্র রমজান ও ঈদে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও যথাযথ শিক্ষা নিশ্চিত করা। তাজিক প্রেসিডেন্ট যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, প্রাচীন জাতীয় সংস্কৃতিকে রক্ষা করার উদ্দেশে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে সরকারের এমন উদ্যোগের সমালোচনা করেছে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো এবং মুসলিমদের অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো।