চলচ্চিত্র ও নাট্যাঙ্গনের দাপুটে অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
হুমায়ুন ফরীদি ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ মে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন । তার বাবার নাম এটিএম নুরুল ইসলাম, মায়ের নাম বেগম ফরীদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে ফরীদি ছিলেন দ্বিতীয়। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেন চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে। একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানিক কেমিস্ট্রিতে ভর্তি হন স্নাতক করতে। পরের বছর ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে অংশ নেন মহান মুক্তিযুদ্ধে।
স্বাধীনতার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে স্নাতক জীবন শুরু করেন হুমায়ুন ফরীদি। সেখানেই তার অভিনয় প্রতিভার বিকাশ ঘটে। সেলিম আল দীনের কাছে নাট্যতত্ত্বে দীক্ষা নেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেই সদস্যপদ পান ঢাকা থিয়েটারের। এই নাট্যদল থেকেই ছড়িয়ে পড়তে থাকে তার অভিনয়ের রঙগুলো। ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নাট্য সম্পাদক।
সেলিম আল দ্বীনের ‘শকুন্তলা’ নাটকের তক্ষক চরিত্রের মধ্য দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক হয় তার। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘নীল নকশার সন্ধানে’ নাটকে অভিনয় করেন। এটি ছিল তার প্রথম টেলিভিশন নাটক।
এরপর অভিনয় করেছেন ‘ভাঙ্গনের শব্দ শুনি’, ‘সংশপ্তক’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’ এবং ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘সাত আসমানের সিঁড়ি’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি’, ‘তিনি একজন’, ‘চন্দ্রগ্রস্ত’, ‘কাছের মানুষ’, ‘মোহনা’, ‘শৃঙ্খল’, ‘প্রিয়জন নিবাস’র মতো দর্শকপ্রিয় নাটকে।
১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘নীল নকশার সন্ধ্যায়’ ও ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’ নাটকে অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’- এ কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যান।
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।
২০১২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে প্রয়াত হন শক্তিমান এ অভিনেতা।