হোয়াইটওয়াশ এড়িয়ে সান্ত্বনার জয় বাংলাদেশের - দৈনিকশিক্ষা

হোয়াইটওয়াশ এড়িয়ে সান্ত্বনার জয় বাংলাদেশের

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সিরিজ আগেই হাতছাড়া হয়ে গেছে। শেষ ওয়ানডেটি ছিল কেবল নিয়মরক্ষার, বাংলাদেশের জন্য হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। লজ্জা এড়ানোর ম্যাচে ইংল্যান্ডকে অবশ্য নাকানি-চুবানিই খাইয়েছে তামিম ইকবালের দল। 

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ২৪৭ তাড়া করতে নামা ইংলিশদের ৪৩.১ ওভারে ১৯৬ রানেই গুটিয়ে দিয়েছে টাইগাররা। বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতেছে ৫০ রানে। তিন ম্যাচ সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরে শেষ করেছে স্বাগতিকরা।

ইংল্যান্ডের রান তাড়ায় বাংলাদেশি বোলাররা শুরুটা ভালো করতে পারেননি। ইংলিশদের ওপেনিং জুটিটাই বড় একটা ঝড় বইয়ে দেয়। তবে এরপর দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরেছে টাইগাররা।

  

নবম ওভারে সাকিব আল হাসান ভাঙেন ৫৪ বলে ৫৪ রানের মারকুটে ওপেনিং জুটি। ২৫ বলে ৩৫ করে কভারে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দেন সল্ট। এরপরের ওভারে এবাদত হোসেন হানেন আঘাত। মিডঅনে মাহমুদউল্লাহর হাতেই ক্যাচ দেন মালান (০)।

এরপর সাকিবের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড সেট ব্যাটার জেসন রয় (৩৩ বলে ১৯)। ৫৪ থেকে ৫৫, এক রানের মধ্যে ইংল্যান্ডের তিন উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ।

কিন্তু প্রমোশন পেয়ে ওপরে উঠা স্যাম কারান আর জেমস ভিন্স ফের প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। চতুর্থ উইকেটে তাদের ৪৯ রানের জুটিটি অবশেষে ভাঙলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। মিরাজকে তুলে মারতে গিয়ে লংঅফ বাউন্ডারিতে লিটন দাসের সহজ ক্যাচ হয়েছেন কারান (২৩)।

এরপর সেট ব্যাটার জেমস ভিন্সকে (৩৮) নিজের তৃতীয় শিকার বানান সাকিব। ক্রিজে থিতু হওয়ার আগেই এবাদত হোসেন বোল্ড করে দেন মঈন আলিকে (২)।

জস বাটলারকে নিয়ে ভয় ছিল। ইংলিশ অধিনায়ককে (২৬) এলবিডব্লিউ করে সেই ভয় দূর করেছেন তাইজুল ইসলাম। ১৫৮ রানে ৭ উইকেট হারানো ইংলিশরা এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি।

সাকিব আল হাসান ৩৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। দুটি করে উইকেট শিকার তাইজুল ইসলাম আর এবাদত হোসেনের।

এর আগে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম আর সাকিব আল হাসানের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। যদিও পুরো ওভার খেলতে পারেনি। ৪৮.৫ ওভারেই ২৪৬ রানে অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা।

সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ৭০ করে এবং ৫৩ রানে রানআউট হন নাজমুল হোসেন শান্ত।

চট্টগ্রামের উইকেট শুকনো, শক্ত। ব্যাটিং বান্ধব। যে কারণে টস জিতেই ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারালেন লিটন দাস। প্রথম ওভারেই স্যাম কারানের বলে খোঁচা দিতে যান লিটন। কিন্তু ব্যাটের প্রান্ত ছুঁয়ে বল গিয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে।

ইনিংসের পঞ্চম বলে স্কোরবোর্ডে এক রান জমা হতেই উইকেট হারান লিটন। যদিও তার নামের পাশে ৩ বল খেলেও কোনো রান নেই। এবারের সিরিজে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন খুব সম্ভাবনাময় ব্যাটারের স্বীকৃতি পাওয়া লিটন দাস। প্রথম ম্যাচে ৭ রান। পরের দুই ম্যাচে দুটি ডাক মেরেছেন তিনি।

লিটন আউট হয়ে যাওয়ার পর উইকেটে থিতু হতে পারলেন তামিম ইকবালও। বাংলাদেশ দলের অধিনায়কও আউট হলেন স্যাম কারানের বলে। ইনিংসের তৃতীয় এবং কারানের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে জিমস ভিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তামিম ইকবাল। আউট হওয়ার আগে তিনি স্কোরবোর্ডে যোগ করে দিয়েছেন ১১ রান। খেলেছেন ৬টি বল।

১৭ রানের মাথায় এই দু’জন আউট হওয়ার পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মুশফিকুর রহিম মিলে বাংলাদেশ দলকে একটা ভালো অবস্থানে নিয়ে যান।

এ দু’জনের ব্যাটে গড়ে ওঠে ৯৮ রানের দুর্দান্ত একটি জুটি। তাদের এই জুটির ওপর ভর করে বাংলাদেশের রান ১০০ পার করে। এরই মধ্যে হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেন শান্ত এবং মুশফিক দু’জনই। শান্ত ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন এই সিরিজেই। এবার পেলেন দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরির দেখা।

৬৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণের পর অবশ্য বেশিক্ষণ আর উইকেটে থাকতে পারেননি। দুর্ভাগ্যের রানআউটে কাটা পড়তে হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তকে। ৭১ বলে ৫৩ রান করে রানআউট হয়ে যান তিনি।

স্কয়ার লেগে খেলেছিলেন শান্ত। কিন্তু এই ফাঁকে মুশফিক দৌড় শুরু করেন রানের জন্য। শান্ত রান নিতে প্রস্তুত ছিলেন না। তবে মুশফিকের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে দৌড় দেন শেষ মুহূর্তে। নন স্ট্রাইক প্রান্তে পৌঁছে ডাইভও দিয়েছিলেন। কিন্তু রান সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলেন। তার আগেই উইকেট ভেঙ্গে দেন রেহান আহমেদ।

শান্ত আউট হয়ে গেলেও সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ৩৮ রানের মাঝারি একটি জুটি গড়ে তোলেন মুশফিকুর রহীম। দীর্ঘদিন পর নিজেও যেন ব্যাট হাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলেন তিনি। খেলে ফেলেছেন ৭০ রানের ইনিংস।

কিন্তু মুশফিককে ইনিংসটা তিন অংকের ঘর পর্যন্ত যেতে দিলেন না ইংলিশ লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। ৩৩তম ওভারের ৪র্থ বলে রশিদের লেগ স্পিনে বিভ্রান্ত হলেন মুশফিক এবং বোল্ড হয়ে ফিরে গেলেন সাজঘরে। ৯৩ বলে খেলা ইনিংসটি সাজানো ছিলো ৬টি বাউন্ডারিতে।

এরপর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি বাধেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার ব্যাট থেকে আসে কেবল ৮ রান। এবারও আদিল রশিদের বলে বিভ্রান্ত হলেন রিয়াদ। বোল্ড হয়ে গেলেন তিনি। দলীয় রান ছিল তখন ১৬৩।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আউট হওয়ার পর মাঠে নামেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। আফিফের ওপর অনেক প্রত্যাশা। কিন্তু ম্যাচের পর ম্যাচ ব্যর্থতার পরিচয়ই দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আজও ২৪ বল খেলে করলেন কেবল ১৫ রান। এ নিয়ে ৬ ম্যাচে কোনো হাফ সেঞ্চুরি নেই তার। সর্বশেষ গত বছর আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ৮৫ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এরপর গত ৬ ম্যাচে আফিফের সর্বোচ্চ রান ২৩।

আফিফের পর মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হন ৫ রানে। তাইজুল ইসলাম করেন ২ রান। সাকিব আল হাসান ৭১ বলে ৭৫ রান করে এ সময় আউট হয়ে যান। ৭টি বাউন্ডারি দিয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংস। সর্বশেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন মোস্তাফিজুর রহমান।

গণ-আন্দোলনে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচারসহ ৫ সিদ্ধান্ত আইন মন্ত্রণালয়ের - dainik shiksha গণ-আন্দোলনে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচারসহ ৫ সিদ্ধান্ত আইন মন্ত্রণালয়ের নতুন শিক্ষাক্রমের সব কাজ স্থগিত - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের সব কাজ স্থগিত ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন আশফাকুল ইসলাম - dainik shiksha ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন আশফাকুল ইসলাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ কিংবা খোলা নিয়ে অস্পষ্টতা - dainik shiksha শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ কিংবা খোলা নিয়ে অস্পষ্টতা কোথাও যেন গোলযোগ না হয়: ড. ইউনূস - dainik shiksha কোথাও যেন গোলযোগ না হয়: ড. ইউনূস এক নজরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা - dainik shiksha এক নজরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036540031433105