মাত্র ১৪ বছর বয়সে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সে সর্বকনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কাইরান কাজী।
কাইরান লিংকডইন প্রোফাইলে তার কৃতিত্বের কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি সেখানে স্টারলিংক ইঞ্জিনিয়ারিং দলে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে উত্তেজনা প্রকাশ করেছেন এবং যেটিকে তিনি গর্বের সঙ্গে 'বিশ্বের সবচেয়ে দুর্দান্ত কোম্পানি' হিসেবেও প্রশংসা করেন। স্টারলিংক স্পেসএক্সের অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা।
কাইরান তার লিংকডইন পোস্টে বলেন, 'বিশ্বের সেরা কোম্পানিতে সম্মানিত স্টারলিংক ইঞ্জিনিয়ারিং দলের সঙ্গে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে এই যাত্রা শুরু করতে পেরে আমি আনন্দিত। আমার ক্ষেত্রে অন্য অনেকের মতো, শুধু বয়সের ভিত্তিতে যোগ্যতার মূল্যায়ন না করা, সত্যিই অনন্য।'
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম এলএ টাইমসের তথ্যানুসারে, বাংলাদেশি পিতা-মাতা মুস্তাহিদ এবং জুলিয়া কাজীর ঘরে জন্ম কাইরান কাজীর। কাইরান কাজী মাত্র ২ বছর বয়স থেকেই পূর্ণ বাক্যে কথা বলে তার চারপাশের লোকদের চমকে দিয়েছিলেন। যা ছিল তার ব্যতিক্রমী ও অসাধারণ প্রতিভার প্রাথমিক ইঙ্গিত।
তার অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতার কারণে ৯ বছর বয়সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রমিত স্কুল পাঠ্যক্রম কাইরানের কাছে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জই মনে হয়নি। তারপর, মাত্র কয়েক মাস পরেই তিনি ইন্টেল ল্যাবসে এআই রিসার্চ কো-অপ ফেলো হিসেবে ইন্টার্নশিপ পান। ১১ বছর বয়স থেকে কাজী কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিষয়ে তার আনুষ্ঠানিক পড়াশোনা শুরু করেন।
২০২২ খ্রিষ্টাব্দে, সাইবার ইন্টেলিজেন্স ফার্ম ব্ল্যাকবার্ড ডট এআই-তে মেশিন লার্নিং ইন্টার্ন হিসেবে কাইরান ৪ মাসের জন্য কাজ করেন। যেখানে কাইরানের প্রতিভাকে বেশ ভালোভাবে কাজে লাগানো হয়। তার লিংকডইন প্রোফাইল অনুসারে তিনি সেখানে, 'অ্যানোমালি ডিটেকশন স্ট্যাটিসটিকাল লার্নিং পাইপলাইন' নকশা করেন। যেটি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন কন্টেন্ট ম্যানিপুলেশনের ঘটনাগুলোকে শনাক্ত করতে সক্ষম।
কাইরান সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে স্নাতক হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যেখানে তিনি হবেন প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ স্নাতক।
এই বছরের শুরুতে, ১৪ বছর বয়সী কাইরান তার ইনস্টাগ্রামে একটি গুরুত্বপূর্ণ চাকরির সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন। কয়েক সপ্তাহ পরেই, তিনি স্পেসএক্স থেকে পাওয়া চাকরির স্বীকৃতি পত্রের একটি স্ক্রিনশট গর্বের সঙ্গে প্রকাশ করেন।
কাইরানের মা জুলিয়া চৌধুরী কাজী ওয়াল স্ট্রিটের একজন এক্সিকিউটিভ। তিনি তার ছেলে কায়রানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর বে এলাকায় থাকেন। কাইরানের বাবা মুস্তাহিদ কাজী মূলত মানিকগঞ্জের বাসিন্দা এবং বর্তমানে একজন প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, কিশোর কাইরান স্পেসএক্সে তার কাজ শুরু করার জন্য তার মায়ের সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ার প্লেস্যান্টন থেকে রেডমন্ড, ওয়াশিংটনে স্থানান্তরিত হওয়ার পরিকল্পনা করছেন৷