১৯৭৬ থেকে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ দেশের মানুষের আয় বাড়েনি: প্রধানমন্ত্রী - দৈনিকশিক্ষা

১৯৭৬ থেকে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ দেশের মানুষের আয় বাড়েনি: প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক শিক্ষাডটকম, গোপালগঞ্জ |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, গোপালগঞ্জ : স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যদি হিসাব করে দেখি, সেই ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এ দেশের মানুষের কোনো আয় বাড়েনি। বরং ওই সাড়ে তিন বছরে জাতির পিতা মাথাপিছু আয় যেটুকু বৃদ্ধি করেছিলেন, ৯২ ডলার থেকে ২৭০ ডলার পর্যন্ত বাড়িয়েছিলেন। পরবর্তীতে দেখা যাচ্ছে, একটানা শুধু মানুষের আয় কমেই যাচ্ছে, কমেই যাচ্ছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, 'সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। কারণ জাতির পিতাকে হত্যা করে যারা ক্ষমতা নিয়েছিল, তারা প্রকৃতপক্ষে গণতান্ত্রিক ধারার না; তারা ক্ষমতা দখল করেছিল জাতির পিতাকে হত্যা করে এবং তারা এ দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে চায়নি। আমাদের স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করতে চেয়েছিল।'

আজ শুক্রবার সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দাড়িয়াকুল গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময় এবং সুবিধা বঞ্চিতদের মাঝে কৃষি ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, 'স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন সেই পাকিস্তানি কারাগার থেকে ফিরে আসেন। তিনি বাংলাদেশটাকে স্বাধীন-সার্বভৌম ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। আমাদের ভূ-খণ্ড অত্যন্ত ছোট কিন্তু আমাদের জনসংখ্যা বেশি। আর সেই সাথে সাথে আমাদের চাষ উপযোগী জমি সীমিত। তার ওপর পরিবারগুলো যখন ভাগ হয়, প্রত্যেক জমিও ভাগ হয়। ভাগ হলেই সেখানে আইল বসে, অনেক চাষ উপযোগী জমি তাতে নষ্ট হয়ে যায়।'

তিনি বলেন, 'তাছাড়া বাংলাদেশের জনগণের দুঃখ দরিদ্রতা দূর করবার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পদক্ষেপ নেন। তিনি বলেছিলেন, আমি এই ঘুণে ধরা সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ গড়ে তুলব। তিনি জানতেন, আমাদের যদি উৎপাদন বাড়াতে হয়, তাহলে সেখানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করতে হবে, শুধুমাত্র সনাতনী পদ্ধতিতে চাষ করলে হবে না—আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করতে হবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ, যেমন জাপানকে উদাহরণ হিসেবে তিনি দেখাতেন যে, জাপানের জমিতে তিন গুণ বেশি সফল হয়, আমাদের দেশে কেন হবে না?'


সেই লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু বহুমুখী গ্রাম সমবায় গড়ে তোলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'তিনি যে সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন, সেই সাথে সাথে বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কীভাবে সমস্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো, গণমুখী করা এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন যাতে হয় সেই ব্যবস্থা তিনি নিয়েছিলেন।'

স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, 'আমরা যদি হিসাব করে দেখি, সেই ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এ দেশের মানুষের কোনো আয় বাড়েনি। বরং ওই সাড়ে তিন বছরে জাতির পিতা মাথাপিছু আয় যেটুকু বৃদ্ধি করেছিলেন, ৯২ ডলার থেকে ২৭০ ডলার পর্যন্ত বাড়িয়েছিলেন। পরবর্তীতে দেখা যাচ্ছে, একটানা শুধু মানুষের আয় কমেই যাচ্ছে, কমেই যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। কারণ জাতির পিতাকে হত্যা করে যারা ক্ষমতা নিয়েছিল, তারা প্রকৃতপক্ষে গণতান্ত্রিক ধারার না; তারা ক্ষমতা দখল করেছিল জাতির পিতাকে হত্যা করে এবং তারা এ দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে চায়নি। আমাদের স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করতে চেয়েছিল।'

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আমরা ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ ২১ বছর পর সরকারে আসি। সরকারে আসার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করব এবং জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা কাজ করব। তখন এই একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পটা, ওই যে জাতির পিতা সমবায় করতে চেয়েছিলেন তারই আলোকে আমরা এটা গড়ে তুলি। প্রতিটি পরিবারের জন্য এটি হচ্ছে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ব্যবস্থা। ক্ষুদ্র ঋণের অধিক যে ট্যাক্স দিতে হয়, সেটা দিতে হবে না। টাকা নিয়ে অতি মাত্রায় সুদ দিতে হয়, সেটা দিতে হবে না। বরং সমবায়ের মাধ্যমে আমরা প্রত্যেকটা পরিবারকে যে সহযোগিতা করব, সেটা থেকে যে উৎপাদন হবে, সেই উৎপাদন থেকে কেউ যদি ১০০ টাকা জমাতে পারে তাহলে সরকারের কাছ থেকে আরও ১০০ টাকা দেওয়া হবে দুই বছরের জন্য। সেটা জমা হবে তার মূলধন হিসেবে।

'আমি এর জন্য একটা ব্যাংক তৈরি করেছি, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। এই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে এটা থাকবে। প্রকল্প থেকে যারা একটু স্বাবলম্বী হয়ে; পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকেই তাদের টাকা থাকবে তার মূলধন হিসেবে, তিনি ব্যবসা বা যেটাই করেন—হাঁস-মুরগি পালন বা চাষ করা, যে যেই কাজ পারবে সেই কাজ করে ওই ব্যাংক থেকে লোন নেবেন এবং কাজ করে টাকা শোধ দেবেন। অর্থাৎ সম্পূর্ণভাবে স্বাবলম্বী হবে।'

তিনি বলেন, 'দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো ২০০১-এ বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে এটাও বন্ধ করে দেয় এক রকম বলতে গেলে। এর কার্যকারিতাই থাকে না। যা হোক, আমরা পরবর্তীতে সরকারে এসেছি এবং কাজ করে যাচ্ছি। একে একে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকটাকে আরও উন্নত করে গড়ে তোলা এবং সেই সাথে সাথে এই ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ দেওয়া, আর ঋণের সাথে সাথে যারা সঞ্চয় করতে পারবে, পারলে তাদের এই আর্থিক সহায়তা দিয়েই স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। সেই কাজটা কিন্তু আমরা করে যাচ্ছি।'

দেশের মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা এ সময় তিনি তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা চাই, সারা বাংলাদেশে এভাবে মানুষকে নিয়ে যৌথভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি, সঞ্চয়ের মাধ্যমে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি এবং সঞ্চয়ের মাধ্যমে জীবনমান উন্নত করতে।'

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং প্রার্থনা করেন। এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আজ বিকেলে তিনি ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করবেন।

আমরা চাই না ছাত্রদের কঠোর হয়ে দমন করতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা - dainik shiksha আমরা চাই না ছাত্রদের কঠোর হয়ে দমন করতে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবার ভর্তির লটারিও স্থগিত করলো সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল - dainik shiksha এবার ভর্তির লটারিও স্থগিত করলো সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে জয়পুরহাটের আইএইচটি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে জয়পুরহাটের আইএইচটি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ৮ ডিসেম্বর - dainik shiksha এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ৮ ডিসেম্বর মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! হা*মলা-ভা*ঙচুরের ঘটনায় মা*মলা করবে মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ - dainik shiksha হা*মলা-ভা*ঙচুরের ঘটনায় মা*মলা করবে মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রলীগকে গণ*ধোলাই দিয়ে থানায় দিতে বললেন ওসি - dainik shiksha ছাত্রলীগকে গণ*ধোলাই দিয়ে থানায় দিতে বললেন ওসি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036830902099609