দৈনিক শিক্ষাডটকম, সিলেট : নদীর গভীর থেকে মাছ শিকার করেন দেলোয়ার আহমদ (৩৮)। অন্তত কয়েক লাখ টাকার মাছ শিকার করেছেন তিনি। এক পর্যায়ের মাছ শিকার নেশায় পরিণত হয় দেলোয়ারের। গত বৃহস্পতিবারও (১ ফেব্রুয়ারি) একইভাবে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীতে নেমেছিলেন তিনি। এবারও ৫০ কেজি ওজনের বাঘ আইড় ধরেছেন তিনি, কিন্তু নিজে পানির ওপর উঠতে পারেননি। সহযোগীরা যখন সংকেত পেয়ে দেলোয়ারকে পানির ওপর টেনে তোলেন, তখন সেখানে ছিল তার নিথর দেহ। সঙ্গে বাঁধা ছিল বাঘ আইড়টিও।
গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর কুরিয়ারবন্দ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত দেলোয়ার তিন বছর ও ছয় মাসের দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তিনি জকিগঞ্জের বারঠাকুরী ইউপির আমলশীদ গ্রামের মো. ইসলাম উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ারসহ তিনজন জেলে মাছ শিকার করতে বৃহস্পতিবার বিকেলে কুশিয়ারা নদীতে যান। অক্সিজেন সিলিন্ডার ও রশি নিয়ে দেলোয়ার পানিতে নামেন। এ সময় তার সহযোগীরা নদীতে নৌকার মধ্যে অবস্থান করেন। সংকেত পেয়ে রশি টেনে আনলে দেলোয়ারের মরদেহ দেখতে পান। এ সময় তার শরীরের সঙ্গে ৫০ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় ছিল। পরে তাকে জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছোট বোন আমিনা বেগম বলেন, দেলোয়ারের সঙ্গীয় অন্য শিকারীরা বাড়িতে খবর দেন। পরে ঘটনাস্থলে এসে ভাইয়ের নিথর দেহ নৌকায় রাখা দেখতে পাই।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাসুদ বলেন, এভাবে মাছ ধরার বিষয়টি প্রথম শুনলাম। ৫০ কেজি ওজনের বাঘ আইড়টি বেশ শক্তিশালী। মাছটি ধরার পর ধস্তাধস্তি করতে গিয়ে কোনোভাবে অক্সিজেনের মাস্ক মুখ থেকে খুলে থাকতে পারে। এতেই পানির গভীরে শ্বাসরোধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাছটি তার শরীরের সঙ্গে বাঁধা থাকায় তিনি আর ডাঙায় উঠতে পারছিলেন না।
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের আবেদনের ভিত্তিতে মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে।