প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে আমাদের মামলা নিষ্পত্তির কাজ অনেকটা ধীরগতিতে চলছিল। তবে গত বছর মামলা নিষ্পত্তির হার অনেকটা বেড়েছে। আমরা যদি মামলা নিষ্পত্তির হার ১২৫ থেকে ১৩০ ভাগ করতে পারি তাহলে আগামী ৫-৬ বছরে মামলার জট সহনশীল পর্যায়ে চলে আসবে। এতে বিচারপ্রার্থীরা অনেকটাই সুফল পাবেন।
সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের কিছু জনবল সংকটও আছে। গত বছর আমরা ১০২ জন নতুন কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছি। এ বছরও একশ জনের মতো কর্মকর্তা নেওয়া হবে। তাহলে আমাদের জনবলের ঘাটতিটা পূরণ হবে।
তিনি বলেন, আমি যখন প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেই তখন প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, আমাদের বিচারলায় আছে, অবকাঠামো আছে, বিচারকদের বসার জায়গা আছে, আইনজীবীদের বসার জায়গা আছে। শুধু বসার জায়গা নেই বিচার প্রার্থীদের। যাদের জন্য এই বিচার ব্যবস্থা তাদের জন্য আদালত প্রঙ্গণের কোথাও স্বস্তিতে বাসার জায়গা নেই। দেশের দুর-দুুরান্ত থেকে পুরুষ বিচার প্রার্থীদের সাথে নারী বিচার প্রার্থীরাও আসেন।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন. সারাদেশে প্রায় ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বাদী-বিবাদী মিলিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ লোককে আদালত প্রাঙ্গণে আসতে হয়। তারা স্বস্তিতে বসে পানি পান করতে পারবেন, শৌচাগার ব্যবহার করতে পারেন- এমন ব্যবস্থা নেই। প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেওয়ার পর তিনি ৩৫ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছেন। অর্থাৎ ৬৪টি জেলায় যদি আমরা ৫০ লক্ষ করে টাকা দেই তাহলে প্রত্যেক জেলায় ন্যায়কুঞ্জ স্থাপন করতে পারবো। যেখানে পুরুষ-মহিলাদের জন্য আলাদা করে দুুটি টয়েলেট থাকবে, ৫০-৭০টি চেয়ার থাকবে, একটি মাতৃদুদ্ধ কর্ণার, এক কর্ণারে থাকবে একটি ফাস্টফুডের দোকান।
এ সময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রইস উদ্দিন, জেলা ও দায়রা জজ জয়শ্রী সমাদ্দার, জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান, নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তানিয়া কামাল, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিন, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উৎপল ভট্টাচার্য, পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) আব্দুস সালাম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিন আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ন্যায়কুঞ্জ-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে প্রধান বিচারপতি আদালত প্রাঙ্গণে একটি বকুল গাছের চারা রোপন করেন। এ ছাড়া বিকেলে আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা ও বিচারকদের নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।