যারা ধ্বংসাত্মক রাজনীতি পছন্দ করে, তারা কখনও দেশ প্রেমিক হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। তারা কখনও স্কুল ভাঙেননি, এমনকি কাউকে ফুলের টোকা দেননিও বলেও উল্লেখ করেন এ জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বর্তমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব মন্তব্য করেন আমু। আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বিএসডি)।
আমির হোসেন আমু বলেন, আমরা কোনো স্কুল ঘর ভাঙি নাই। কিন্তু তারা (বিএনপি) ভোট সেন্টার নষ্ট করার নামে ৬০০ স্কুল ধ্বংস করেছে। যারা একটি দেশের ৬০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে পারে, তারা যদি আন্দোলনে নামে, তাহলে তাদের মানুষ কি ভাবতে পারে। এটি হচ্ছে তাদের চরিত্র। মানুষ হত্যা কোনো আন্দোলনের অংশ হতে পারে না। আজকে তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা!
তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তান আমল থেকে হাফপ্যান্ট পরা অবস্থায় আন্দোলন শুরু করেছি। এই খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান, এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। খালেদা জিয়াকে ৯৬ খ্রিষ্টাব্দেএক মাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। পদত্যাগ করে বাধ্য হয়েছিলেন নির্বাচন দিতে। সেই আন্দোলনে কিন্তু আমরা অগ্নি সন্ত্রাস করিনি। কোনো আন্দোলনেই আমাদের অগ্নি সন্ত্রাস করার প্রয়োজন হয় না।
বিএনপি’র পার্লামেন্টটি ফর্মে গণতন্ত্র নাই উল্লেখ করে আমু বলেন, আমার বিশ্বাস এখন পর্যন্ত তারা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে পার্লামেন্টারি ফর্মে আসে নাই। এখন পর্যন্ত তাদের গঠনতন্ত্রের প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্ম। আজকে তারা বড় বড় গণতন্ত্রের বুলি আওড়ায়।
১৯ বার শেখ হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে বিএনপি, মন্তব্য করে আমু বলেন, এরা রাজনৈতিকভাবেই শুধু আমাদেরকে বিপর্যস্ত করার চেষ্টা করে নাই। বিভিন্ন সময় আন্দোলনে গণহত্যা চালিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমরা টানা ২১ বছর নির্যাতিত হয়েছি। মামলা হামলা খুন-খারাবি এমন কিছু নাই যার শিকার আমরা হইনি। তারপর ৯৬ খ্রিষ্টাব্দে আমরা যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতায় গেলাম তখন আমরা তাদেরকে একটা ফুলের টোকা পর্যন্ত দিইনি।
চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, ৯৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো কিছু করা হয়নি। প্রতিহিংসা তো দূরে থাক, আমরা কোনো বিজয় মিছিল করলে সেখানে আক্রমণ হতে পারে; সেই দুশ্চিন্তায় শেখ হাসিনা আমাদেরকে অনুমতি দেননি। ২০০১ এ (বিএনপি) ক্ষমতায় এসে প্রতিদান হিসেবে ৩০ হাজার লোককে হত্যা করল। আজকে তারা বড় বড় কথা বলে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বিএসডি’র কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান, জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমদ মুক্তা, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ফারুকী প্রমুখ।