শিশু থেকে বয়স্ক সব বয়সের মানুষেরই বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে স্মার্টফোন। আজকাল স্কুলের অনলাইন পড়াশোনার জন্য সন্তানদের হাতে না চাইলেও মোবাইল ফোন দিতে হচ্ছে। আবার অনেক পরিবারে মা-বাবাকে কাজের প্রয়োজনে বাইরে থাকার কারণে বাড়িতে বাচ্চার কাছে ফোন থাকা জরুরি। তবে প্রয়োজন ছাড়া সারা দিনে ফোনের পেছনে সন্তান কতক্ষণ সময় ব্যয় করছে, সেদিকে নজর রাখতে হবে অভিভাবকদের। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোনে বেশি সময় কাটানোয় শিশুরা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা—যেমন চোখের সমস্যা, মানসিক চাপ, নিদ্রাহীনতা ও মেধা বিকাশের সমস্যায় পড়ে।
সম্প্রতি ভিভো ও সাইবার মিডিয়া রিসার্চের এক গবেষণা সমীক্ষায় দেখা যায়, ৯১ শতাংশ শিশু মোবাইল ফোন থেকে দূরে বা আলাদা থাকলে দুশ্চিন্তা অনুভব করে। ভারতের দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, আহমেদাবাদ ও পুনের মতো শহরের ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারীর ওপর এ সমীক্ষা চালানো হয়। স্মার্টফোন কীভাবে অভিভাবকদের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক ও তাদের মানসিক সুস্থতাকে প্রভাবিত করে সে বিষয়টি সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
সমীক্ষার তথ্যানুযায়ী, ৭০ শতাংশ বাবা-মা সন্তানের জ্ঞান বাড়ানোর ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের ভূমিকা স্বীকার করেছেন। ৬০ শতাংশেরও বেশি পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার্থে স্মার্টফোনকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। একইভাবে প্রায় ৬০ শতাংশ শিশু একমত যে স্মার্টফোনের মাধ্যমে বিশ্ব সম্পর্কে তথ্য জানা সহজ হয়েছে। ৫৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানায়, স্মার্টফোন দূরবর্তী বন্ধু ও প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সহজ করে তুলেছে।
সমীক্ষায় আরও দেখা যায়, গড়ে শিশুরা ১২ বছর বয়সে স্মার্টফোন ব্যবহার শুরু করে থাকে। প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা তারা স্মার্টফোনে ব্যয় করে। যার মধ্যে গেমিংয়ে বেশি সময় দিয়ে থাকে। উদ্বেগজনকভাবে ৯১ শতাংশ শিশু তাদের ফোন থেকে আলাদা হওয়ার সময় উদ্বেগ অনুভব করে। এতে বোঝা যায়, শিশুদের মাঝে স্মার্টফোনের প্রতি গভীর এক মানসিক নির্ভরতা তৈরি হয়েছে। প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়িতে স্মার্টফোনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা প্রকাশ পেয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় সমীক্ষায়।