‘আমি আর স্কুলে যাব না, জোর করে পাঠালে আত্মহত্যা করব।’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহপাঠীদের সামনে নাকে খত দেওয়ানোয় ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র বাড়ি ফিরে মা-বাবার কাছে এভাবেই তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বগেরগাছি নওদাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এ ঘটনায় ছাত্রের বাবা ও বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ইজ্জত আলী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তাঁর ছেলে মেহেরাব হোসেন অভি বুধবার স্কুলে গিয়েছিল। দুপুরে রিফাত নামে তার এক বন্ধু একটি বই মেলে ধরে অভিকে রিডিং পড়তে বলে। এ সময় রিডিং পড়া নিয়ে রিফাত বন্ধু অভিকে তাচ্ছিল্য করে। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে চড়-থাপ্পড় দেওয়ার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি রিফাত তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলামকে জানালে তিনি ক্লাসের সব শিক্ষার্থীকে ডেকে আনতে বলেন। শিক্ষার্থীরা আসামাত্র প্রধান শিক্ষক রিফাত ও অভিকে ১০ হাত নাকে খত দিতে বলেন। নইলে তাদের ৫০ বেতের বাড়ি দেবেন বলে ভয় দেখান। মারের ভয়ে ওই দুই ছাত্র সহপাঠীদের সামনেই নাকে খত দিতে বাধ্য হয়। পরে বিদ্যালয় ছুটির পর অভি বাড়িতে এসে ক্ষোভে-দুঃখে বই-ব্যাগ ছুড়ে ফেলে দিয়ে আর ওই স্কুলে যাবে না বলে কাঁদতে থাকে।
অভিযোগকারী ইজ্জত আলী জানান, সহপাঠীদের সামনে ছাত্রদের নাকে খত দেওয়ানো মোটেও উচিত হয়নি। শিক্ষক অন্যভাবে শাসন করতে পারতেন। এ ঘটনার পর তাঁর ছেলে আর ওই স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। সন্তানকে নিয়ে তিনি বেশ দুশ্চিন্তায় আছেন। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।
ছাত্রদের নাকে খত দেওয়ানোর বিষয়টি জানতে বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিবার কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে মেসেজ দিয়েও সাড়া মেলেনি।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের মারধর করা যাবে না। আর নাকে খত দেওয়ানোর তো প্রশ্নই আসে না। এমন ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যাবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।