প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. সাইদুর রহমান বলেছেন, গণঅভ্যুথানে আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে গণঅভ্যুত্থানে আহত একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ড. সাইদুর রহমান বলেন, গণঅভ্যুথানে আহতদের চিকিৎসায় সারাদেশে সরকারি হাসপাতালে ডেডিকেটেড বেড থাকবে। প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে অভ্যুথানে আহতদের চিকিৎসা ও পূনর্বাসনে স্বল্পমেয়াদি ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সভাপতিত্বে বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম ওস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী মো. সায়েদুর রহমান ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে এই বৈঠক শুরু হয়। যদিও বৈঠকটি শুরু হওয়ার কথা ছিল দুপুর ২টায়।
এ সময় আহতরা ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো- গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের অতিদ্রুত মন্ত্রী বা উপদেষ্টারা আহত হলে যে মানের চিকিৎসা দেয়া হতো সে মানের চিকিৎসা দিতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়ে নিজ খরচে চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের চিকিৎসা খরচ পরিশোধ করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের সম্মাননা কার্ডের মাধ্যমে একটি প্রজন্ম পর্যন্ত মাসিক ভাতা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের স্মৃতি ফাউন্ডেশন নামে যাদুঘর নির্মাণ করে প্রতি বছর ১ জুলাই হতে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শহীদদের স্মরণে গণ-স্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন ও আহত হয়ে যারা অঙ্গ হারিয়েছেন, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদের মেডিকেল ফাইল তদন্ত করে কোনো ডাক্তার বা মেডিকেলের অবহেলার কারণ খুঁজে পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করে সেই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আগামীতে রাষ্ট্র সংস্কারে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধাদের মতামত গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, বুধবার উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতদের একাংশ। মাঝরাতেও তাদের বিক্ষোভ অবস্থান অব্যাহত থাকে। পরে রাত আড়াইটার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা সেখানে উপস্থিত হয়ে দাবি মানার এবং আহতদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আজ দুপুরে বৈঠকের আশ্বাস দিলে হাসপাতালে ফিরে যেতে রাজি হন বিক্ষোভকারীরা।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।