২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় জড়িত অপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।
গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন-সংলগ্ন প্যারিস রোডে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে একাগ্রতা পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুল রহমান প্রামানিক, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ।
এ সময় মানববন্ধনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, অতীতে যেসব ঘটনা ঘটেছে আমরা সব ঘটনার বিচার চাই। এছাড়া ভবিষ্যতের জন্য আমাদের প্রস্তুতি দরকার। সেই প্রস্তুতিগুলো শিক্ষকদের তিনটা পর্যায়ে নেওয়া সম্ভব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষক ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চায় না। যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে মনে করেন ছাত্ররাজনীতি না থাকা ভালো তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি থাকাটা খুবই দরকার। কারণ ছাত্ররাজনীতিতে সচেতন হয়ে দেশকে তারাই নেতৃত্ব দেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এইচ এম কামরুল আহসানের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, দেশকে মেধা ও নেতৃত্বশূন্য করতে তৎকালীন মৌলবাদী জামায়াত-বিএনপির জোট সরকার যে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল সে ঘটনায় ২৪ জনকে প্রাণ দিতে হয়েছে। পাকিস্তানি পন্থায় দেশকে পরিচালনা করতে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। গ্রেনেড হামলায় যারা আহত হয়েছিলেন তাদেরকে চিকিৎসাসেবাও নিতে দেওয়া হয়নি যেন তারা রাস্তায় মারা যায়। এ ছিল তৎকালীন জোট সরকারের ঘৃণ্য রাজনীতি।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত হয়েছে। দেশে যখনই নির্বাচন আসে তখন সরকারের অপপ্রচার আরও বেগবান হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এলে আজানের ধ্বনি শুনা যাবে না এমন সব মিথ্যাচার চালানো হয়। বাংলাদেশে থাকতে হলে দেশের সংবিধান মেনে চলতে হবে। এ সময় সকলকে বিচারের কাঠগড়ায় আনতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে দেশের মানুষ যখন শেখ হাসিনার ওপর বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন তখনই এই নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালায় মৌলবাদী বিএনপি সরকার। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর শেখানো পথ দিয়েই হাঁটছেন। ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট আল্লাহ নিজে শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তাকে দিয়ে ভালো কাজ হচ্ছে এবং হবে, এজন্যই তিনি বেঁচে আছেন। জনগণের হৃদয়ের উত্তাপ থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম। ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিলেন নেতাকর্মীরা, এখন রক্ষা করবে দেশের জনগণ। এ সময় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগর, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পুরণঞ্জিত মহালদার।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।