বখাটেরা উত্ত্যক্ত করায় অনি রায় নামে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাসপাতাল রোড মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহতের বাবার নাম গৌতম রায়। তিনি প্রায় ১৭ বছর ধরে প্রবাসে আছেন। তিন মাস আগে তিনি দেশে এসেছিলেন।
নিহতের ভাই কলেজছাত্র অর্ঘ্য রায় বলেন, আমার বোন ঝিকরগাছা বিএম হাই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। আজ সকাল ৮টার দিকে সে স্কুলে যায় কোচিং করতে। কোচিং শেষে সকাল ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে ঘরের দরজা আটকে মায়ের শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। ওই সময় মা রান্নাঘরে এবং আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। পরে মায়ের চিৎকারে ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে উঁকি মেরে দেখি, বোন আমার ঝুলে রয়েছে। প্রতিবেশীদের সহায়তায় ঘরের দরজা ভেঙে বোনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্ঘ্য রায় বলেন, হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি, কিছুদিন ধরে একই স্কুলের কয়েক ছেলে আমার বোনকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। আজ সকালে কোচিং শেষে ফেরার পথে ওই ছেলেরা আবার উত্ত্যক্ত করে। তাদের নিষেধ করলে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে তারা আমার বোনকে ধাওয়া করে। ওদের ধাওয়ায় বোন বাসায় এসে মায়ের কাছ থেকে তার ফোন নিয়ে এক বান্ধবীকে কল দেয়। কিন্তু সে ফোন কল রিসিভ করেনি। এরপরই সে ঘরের ভেতর থেকে ছিটকিনি আটকে ফাঁস দেয়। ঘটনায় জড়িত বখাটেদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান ভাই।
জানতে চাইলে ঝিকরগাছা বিএম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, ঘটনা শুনে ওই স্কুল ছাত্রীর বাসায় গিয়েছিলাম। কারা তাকে উত্ত্যক্ত করতো, বিষয়টি আমার অজানা। মেয়েটি ছাত্রী হিসেবে ভালো, খেলাধুলায়ও ভালো। তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ছিল না। খোঁজখবর নিচ্ছি, যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত বলেন, বখাটেদের ধাওয়ায় স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে এমন কোনও তথ্য আমার কাছে নেই। এ বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়ওনি। তবে সকালে এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আত্মহত্যার কারণ উদঘাটনে আমরা চেষ্টা করছি। জানতে পারলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।