বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁশহাটি এলাকার ‘অভয়ারণ্য পাঠাগারে’ এ ঘটনা ঘটে। পরে পাঠাগার কর্তৃপক্ষ শুক্রবার প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়।
ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শহিদুল্লাহ জানান, পাঠাগারে থাকা হুমায়ুন আহমেদ ও জাফর ইকবালের বইসহ কিছু বই হুজুররা ইউএনও কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।
তাঁদের দাবি, এসব লেখক নাস্তিক। রোববার ইউএনও কার্যালয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি।
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘যৌক্তিক দ্বিমতকে স্বাগত’ স্লোগানে অভয়ারণ্য পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দেও পাঠাগারে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল।
পাঠাগার কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বাংলাদেশ যুব খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী ওরফে রিশাদ আমীন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পাঠাগার নিয়ে মন্তব্য করেন।
সেখানে তিনি লেখেন, “ধনবাড়ীতে নাস্তিক্যবাদের কোনো জায়গা হবে না। নাস্তিক বানানোর কারখানার সন্ধান পেয়েছি আমরা। দ্রুত পাঠাগার ছাড়ুন।”
ওইদিন রাত ৮টার দিকে ২০-২৫ জন যুবক পাঠাগারে গিয়ে হামলা চালায়। পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দূর্জয় চন্দ্র ঘোষ জানান, তারা পাঠাগারে ঢুকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, হুমায়ুন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ ও জাফর ইকবালের বইসহ চার শতাধিক বই রিকশায় করে নিয়ে যায়।
বই নিয়ে যাওয়ার পর যুব খেলাফত মজলিসের নেতা ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দিয়ে লেখেন, “জয়বাংলা কর্মসূচী। বি:দ্র: যাদের বোঝা দরকার তারা বুঝতে পারছে।”
দূর্জয় চন্দ্র ঘোষ বলেন, হামলাকারীরা বই পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়, তবে পুলিশের উপস্থিতিতে বইগুলো পুড়িয়ে না দিয়ে নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দেও পাঠাগারে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল, যার তদন্ত তেমন এগোয়নি।পাঠাগারের সভাপতি সুপ্তি মিত্র জানান, বই লুটপাটের ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বইগুলো ইউএনও কার্যালয়ে রয়েছে বলে জেনেছেন।
ঘটনার বিষয়ে যুব খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী বলেন, পাঠাগারে ইসলামবিদ্বেষী বই ছিল, তাই সেগুলো ইউএনও কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহীন মাহমুদ বলেন, বই নিয়ে আসার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। দুই পক্ষকে কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে, উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।