জুলাই আন্দোলনে গিয়ে ধ*র্ষণের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

জুলাই আন্দোলনে গিয়ে ধ*র্ষণের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী

আদৃতা অভিযোগ করে বলেন, ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নারায়নগঞ্জের চাষাড়া গোল চত্বর থেকে ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল আমাকে তুলে নিয়ে যায়। তারা আমাকে কলেজ রোডের পেছনে আজমেরি ওসমানের বাসার নিচের একটি অফিসে নিয়ে যায়।

জুলাই আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রলীগের হাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বেসরকারি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী অদৃতা মাহি। আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, উমামা ফাতেমা, নুসরাত তাবাসসুমসহ অন্যদের বিষয়টি জানালেও কাউকে পাশে না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন তিনি।

আদৃতার এমন অভিযোগের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সম্মুখ ভূমিকা’ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ দাবি করেন তিনি। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (পুনাব) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

আদৃতা অভিযোগ করে বলেন, ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নারায়নগঞ্জের চাষাড়া গোল চত্বর থেকে ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল আমাকে তুলে নিয়ে যায়। তারা আমাকে কলেজ রোডের পেছনে আজমেরি ওসমানের বাসার নিচের একটি অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাকে অনেক গালিগালাজ করে। গালিগালাজের এক পর্যায়ের অফিস থেকে সবাই বেরিয়ে যায়। তবে দুইজন অফিসে ছিল। তারা সেখানে আমাকে ধর্ষণ করে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছে।

আদৃতা বলেন, ‘‘উমামা ফাতেমাকে যখন জানাই, তখন তিনি বলেন ‘ও তোমার সাথে অনেক খারাপ হইছে, দেখবোনে বিষয়টা।’

নুসরাত তাবাসসুমকে যখন বলি, তখন তিনি বলেন, ‘আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নক দিস। এরপর তাকে একাধিকবার মেসেজ করেছি। তিনি মেসেজ সিন করে রেখে দিয়েছেন। সারজিসও হোয়াটসঅ্যাপে নক দিতে বলেছিল। তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তবে সারজিস ভাইও কোনো কিছু করেননি।’’

তিনি বলেন, ‘২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ নভেম্বর আমি কনসিভ করি। এটাও জানিয়েছি। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের মোমো নামে এক শিক্ষার্থীকে জানাই। তিনি আমাকে ধানমন্ডিতে নিয়ে গিয়ে অনেকভাবে বোঝায়। সারজিসকেও জানায়। ঘটনা জানার পর সারজিস আমাকে কল করে একজন চিকিৎসকের নাম্বার দেয়। সেই চিকিৎসকের কাছে গেলে কি কি করতে হবে সেটি আমাকে বলে দেবে বলেও জানায়।’

আদৃতা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার এই ঘটনা এমন কেউ নেই যে জানে না। যাদের কারণে আমার জীবন শেষ হয়ে গেছে তারা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই আন্দোলনের পরও আমাদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। সন্তানের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য আমি একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছি। গত ডিসেম্বরে আমার বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। জুলাই আন্দোলনের ছয় মাস পার হলেও আমি ন্যায্য বিচার পাইনি।’

এদিকে আদৃতার এমন অভিযোগের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আহনাফ নামে একজন বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করে একটি পোস্ট দেন। এর প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম আহনাফের পোস্টটি শেয়ার করে লেখেন, ‘আদৃতাকে একবার আমার সামনে এনে অভিযোগ করতে বলেন যে তাকে সাহায্য করতে চাওয়া হয় নি। আদৃতাকে সব রকম সাহায্য দিতে চাওয়া হয়েছিল, তার পরিবারের সাথে কথা বলে তার সুচিকিৎসা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাস্থলে তদন্ত, মামলা সব কিছুর কথা বলা হয়েছিল। ‘

তিনি আরও লেখেন, ‘কিন্তু সে চেয়েছিল অন্য কিছু কিন্তু তার অনুমতি ব্যতিরেকে আমি সেটা প্রকাশ করতে পারছি না। আদৃতাকে বলুন নাম নিয়ে অভিযোগ করতে, অন্যথায় তার স্টেটমেন্ট এবং আপনার বিরুদ্ধে না জেনে অভিযোগ করার নিন্দা একসাথে উপযুক্ত স্থানে পৌঁছে দেয়া হবে।’