বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ১৩ শিক্ষককে চারটি আবাসিক হলের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন শিক্ষক ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে নৌকা মার্কার নির্বাচনী প্রচারণার কমিটিতে ছিলেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় ববির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে আবাসিক হলগুলোতে নতুন করে আবাসিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।
যেখানে বিজয় ২৪ হলের আবাসিক শিক্ষক হিসেবে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ আশিক-ই-ইলাহী নৌকা মার্কার প্রচারণা কমিটিতে ১২ নম্বর সদস্য পদে ছিলেন।
এছাড়াও শেরে বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মাদ সাকিবুল হাসান নৌকা মার্কার প্রচারণা কমিটিতে ১৩ নম্বর সদস্য, তাপসী রাবেয়া বসরী হলের আবাসিক শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার ১৪ নম্বর সদস্য এবং কবি সুফিয়া কামাল হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারজানা আফরোজ নৌকা মার্কার প্রচারণা কমিটিতে ১৭ নম্বর সদস্য ছিলেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০২৩ এর নৌকা মার্কার প্রচারণা কমিটির সদস্য তালিকা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুর্নবাসনের বিষয়ে বারবার অভিযোগ জানিয়ে আসছি। যখন আমার ভাইদের ওপর গুলি চলছিলো তখন যারা দায়িত্ব ছিল। তারাও কোনো না কোনো ভাবে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের গণহত্যাকে সমার্থন জানিয়েছে। আমরা চাই না সেসব খুনি আবার পদে আসুক৷ তাদেরকে পদ দেওয়া মানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অপমানিত করা৷ আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ধারণ করেন তারা অবশ্যই চাইবে না আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুবিধাভোগীরা আবার প্রশাসনিক কোনো পদে আসুক। আমাদের অনুরোধ থাকবে যারা গণঅভ্যুত্থান চলাকালীনসময়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে বসে তামাশা দেখেছে তারা যেন এই নতুন বাংলাদেশে এসে আবার পদে বসে৷ তাহলে সেটা শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলামকে আওয়ামী দোসরদের পুর্নবাসনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি তাদের এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমি সর্বোচ্চ কতৃপক্ষের নির্দেশেই নোটিশ দিয়েছে।