ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের নৈরাজ্য বন্ধ, ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে বিদ্যমান সকল প্রকার বৈষম্যের অবসান এবং মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মক্ষেত্রে বিএসসি প্রকৌশলীদের নায্য অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন শিক্ষার্থীরা। লিখিত বিবৃতিতে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের নামে যেভাবে সারাদেশে রেল ও সড়কপথ অবরোধ করে জনদুর্ভোগ, নৈরাজ্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো হচ্ছে, আমরা বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। গত ১৬ এপ্রিল পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের একজন শিক্ষার্থীর উপর ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা কোনো উস্কানি ছাড়াই, শুধুমাত্র প্রতিহিংসাবশে হামলা করেছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের বেশিরভাগ দাবিই বাস্তবতার সাথে সাংঘর্ষিক এবং দেশের সংবিধানের পরিপন্থী। আন্দোলনের নামে সংবিধান পরিপন্থী হঠকারী দাবি-দাওয়া না করে যৌক্তিক আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান এবং শিক্ষা ও উন্নয়নের পথ তৈরি করার জন্য আন্দোলনরত ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান তারা।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, ডিপ্লোমা-বিএসসির বাইরে, অন্যান্য ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরাও বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। সরকারি চাকরির ১২-১৪ গ্রেডের চাকরিতে যেখানে অনার্স-মাস্টার্স যোগ্যতা চাওয়া হয়, সেখানে ডিপ্লোমারা অনার্সের লেভেলের চেয়েও কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সরাসরি ১০ম গ্রেডে চাকরি করছে। এবং সেখান থেকে ৩৩-৭০ শতাংশ কোটায় ৯ম গ্রেডে প্রমোশন নিচ্ছেন। এটাও অন্যান্য বিভাগের অনার্স শিক্ষার্থীদের সাথে চরম বৈষম্য। ডিপ্লোমারা যদি নিজেদের ১০ম গ্রেডের SAE পদের জন্য নিজেদের যোগ্য মনে করে, তবে বিএসসিদের সাথে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে জয়েন করুক।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা দীর্ঘদিন ডিপ্লোমাদের শতভাগ কোটা এবং তাদের প্রমোশন সিন্ডিকেটের কারণে নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এখন থেকে, কোনো বৈষম্য সহ্য করা হবেনা। নতুন বাংলাদেশে কোন বৈষম্য সৃষ্টিকারী কোটার অস্তিত্ব থাকতে দিব না, দিব না, দিব না।
এসময় তারা তিনটি দাবি উপস্থান করেন। দাবিগুলো হলো- ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেডে সহকারী প্রকৌশলী পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোন পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেয়া যাবে না। টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে অর্থাৎ, ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীকেই পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ 'ইঞ্জিনিয়ার' পদবি ব্যবহার করতে পারবে না, এই মর্মে আইন পাশ করে বাস্তবায়ন করতে হবে।