পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের আহ্বান | বিবিধ নিউজ

পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের আহ্বান

বর্তমান সরকার বিচার বিভাগ সংস্কারের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন তালিকায় পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় নেই। এই তালিকায় পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান তারা।

#জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন #সচিবালয়

বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের লোগোবাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের লোগো

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংস্কার কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন।

সার্ভিস এসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, বর্তমান সরকার বিচার বিভাগ সংস্কারের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন তালিকায় পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় নেই। এই তালিকায় পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান তারা।

শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃবিতে এ তথ্য জানা যায়।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সংস্কারের লক্ষ্যে কিছু সংস্কার কমিশন গঠন করেন। দীর্ঘ আলোচনা ও গবেষণার পরে সংস্কার কমিশনগুলো তাদের সংস্কার প্রস্তাব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন।

অত্যান্ত আনন্দের বিষয় যে, সরকার সংস্কার কমিশনের রিপোর্টগুলো পাওয়ার পর এখন তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের অন্যতম একটি সংস্কার প্রস্তাব ছিলো অধস্তন আদালতের জন্য পৃথক সচিবালয়। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি যে, বর্তমান সরকার বিচার বিভাগ সংস্কারের লক্ষ্যে যেসব সংস্কার প্রস্তাব অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করার তালিকা করেছে, তার মধ্যে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয়ের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

ঐতিহাসিকভাবে ব্রিটিশ আমল থেকে বিচার বিভাগ পৃথককরণ ইস্যুটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হলেও মাঝে পাকিস্তান আমল ও পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও কোনো সরকারই তা বাস্তবায়নের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। সুপ্রিম কোর্টের স্বাধীন বিচার বিভাগের বিষয়ে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে মাসদার হোসেন মামলায় দেয়া নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার আংশিক বাস্তবায়ন হয়।

এরপরে আর কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাইনি। বিগত দিনের অভিজ্ঞতায় আমরা দেখতে পাই যে, রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার মসনদে গেলে দলীয় স্বার্থের কথা ভেবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা আর চিন্তা করে না।

এজন্য বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শাসনকাল এক সুবর্ণ সুযোগ বলে আমরা মনে করি।

দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথম এবং প্রধান অনুষঙ্গ হলো স্বাধীন বিচার বিভাগ। সমাজে প্রকৃত ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে স্বাধীন বিচার বিভাগের বিকল্প নেই। বিগত দিনে বিচার বিভাগকে কিভাবে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে ন্যায়বিচারকে ভুলুণ্ঠিত করা হয়েছে তার নজির আমরা সবাই লক্ষ্য করেছি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রতিবন্ধকতাগুলো দূরীভূত না হলে ভবিষ্যতেও হীন স্বার্থে বিচার বিভাগকে ব্যবহারের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।

প্রধান বিচারপতি দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর বিচার বিভাগ সংস্কারে ১২ দফা প্রস্তাবনাসহ ঐতিহাসিক রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন এই রোডম্যাপ বাস্তবায়নে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংস্কার কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

#জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন #সচিবালয়